মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

সরকারি দলের মতো সভা সমাবেশের সুযোগ চাই

-হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ

সরকারি দলের মতো সভা সমাবেশের সুযোগ চাই

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, দেশে নাগরিক ও ভোটাধিকার বলতে কিছু নেই। সভা-সমাবেশসহ নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সরকারি দলের সভা-সমাবেশ করতে কোনো ধরনের ঝামেলা পোহাতে হয় না। কিন্তু বিরোধী দলের সভা-সমাবেশে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি করা হয়। আমরাও সরকারি দলের মতো সভা-সমাবেশের সুযোগ চাই। এটা আমাদের অধিকার। সবার জন্য সমান সুবিধা না পাওয়ার আচরণ রাজনীতিতে একটি            অশনিসংকেত। এ অবস্থা স্বাধীন সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক দেশে কাম্য হতে পারে না। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। মাওলানা ইউনুছ আহমাদ আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলন চলমান ইস্যুগুলোতে আন্দোলন-সংগ্রাম করছে। বর্তমানে সারা দেশে জেলা ও মহানগর কমিটি পুনর্গঠনের কাজ শেষ হয়ে থানা, উপজেলা ও পৌরসভা কমিটি পুনর্গঠনের কাজ চলছে। মার্চের মধ্যে আমাদের ইউনিয়ন কমিটি গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪৫৫৬টি ইউনিয়নে হাতপাখায় নির্বাচন করার টার্গেট নিয়ে কাজ চলছে। তিনি বলেন, জনগণকে কল্যাণধর্মী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে ব্যাপক দাওয়াতি কার্যক্রম চলছে। নেতা-কর্মীদের আদর্শিক মান উন্নয়নের জন্যও আত্মশুদ্ধিমূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ চলছে। ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে দলের মহাসচিব বলেন, গত নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে আমরা জনগণের ব্যাপক স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া লক্ষ্য করেছি। কিন্তু নজিরবিহীন ভোট ডাকাতির কারণে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মাঝে রাজনীতি নিয়ে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি হয়েছে। জনগণ প্রচলিত দূষিত, বিষাক্ত, কলুষিত রাজনীতির ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। জনগণ রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন চায়। এ লক্ষ্যে নানা প্রতিকূলতার মাঝেও আল্লাহর রহমতে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে। ইউনুছ আহমাদ বলেন, ক্যাসিনো আক্রান্ত আওয়ামী লীগের কিছু চুনোপুঁটি নেতা গ্রেফতার হলেও রাঘববোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। চাল ও তেল নিয়ে তেলেসমাতি চলছে দীর্ঘদিন ধরে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তিনি বলেন, কল্যাণধর্মী রাজনীতি হলে ইসলামী দলের মধ্যে অনৈক্য ও বিভেদ থাকতে পারে না। তাদের এক প্ল্যাটফরমে আসতে না পারার অন্যতম কারণ পার্থিব লোভ ও ক্ষমতার মোহ।

ইউনুছ আহমাদ বলেন, দেশে সীমাহীন দুর্নীতি, সন্ত্রাস, ধর্ষণ, খুন, গুম, ঘুষ, ঋণখেলাপি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির মাধ্যমে জনগণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। মানুষের ভোটাধিকার ও মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। জানমালের নিরাপত্তা নেই। সুস্থ রাজনীতির পরিবেশ নেই। ক্ষমতাসীন দলের লোকজন দেশের সম্পদ লুটে খাচ্ছে। শেয়ারবাজারে চরম ধস নেমেছে। মানুষের বাকস্বাধীনতা নেই। ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে উঠছে।

জনগণের মনে এক ধরনের শঙ্কা বিরাজ করছে। এ দেশে যে কোনোভাবেই ক্ষমতায় থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়াই রাজনৈতিক শিষ্টাচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ হিংসাত্মক, ধ্বংসাত্মক ও ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর