মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

জামাইকে পরাজিত করে কাউন্সিলর হলেন শ্বশুর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আলোচনা ছিল কাউন্সিলর পদে শ্বশুর-জামাইয়ের লড়াই। জামাইয়ের পানির বোতলে ভিজবে শ্বশুরের পাঞ্জাবি নাকি শ্বশুরের পাঞ্জাবির পকেটে ঢুকবে জামাইয়ের পানির বোতল- এ নিয়ে সর্বত্র ছিল জল্পনা-কল্পনা। ফলে ভোটারদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলেন তারা দুজন। অবশেষে ভালোবাসা দিবসের দিন হওয়া ভোটে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটাররা ভালোবাসা দেখালেন শ্বশুরের প্রতি। শ্বশুর মো. বাবুল মিয়া ১ হাজার ৪৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামাই মো. হুমায়ুন কবির পেয়েছেন ৮৪৬ ভোট। এ ওয়ার্ডে আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী মো. দেওয়ান সাদ্দাম উটপাখি প্রতীকে মাত্র ৬৮ ভোট পান। মো. বাবুল মিয়া দ্বিতীয়বারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেন। মেয়ে লিজা আক্তারের            শ্বশুর মন্তাজ মিয়া এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। বাবার অছিয়ত পূরণেই ভোটের মাঠে নামেন হুমায়ুন কবির। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভোটার বলেন, মূলত প্রচারণার ভিন্ন কৌশলে শ্বশুর বাবুল মিয়া জয়লাভ করেছেন। তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে আত্মসম্মান রক্ষার জন্য ভোটারদের কাছে অনুরোধ করেন। মেয়েজামাইয়ের কাছে হেরে গেলে বেঁচে থাকা কষ্টের হবে বলে উল্লেখ করেন। এতে অনেকের মন গলে যায়।

প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও ভোটের দিন ঠিকই শ্বশুরের সম্মানকে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। বিজয়ী হয়ে বাবুল মিয়া বলেন, ‘আমি আমার মেয়েজামাইকে নিজের ছেলের মতো দেখেছি। এখনো তা দেখব। আমি তাকে কলিজার টুকরো মনে করি। এতে আমাদের মাঝে সম্পর্ক নষ্ট হবে না। জামাই তো জামাই-ই। আমার মেয়ে ভোট কেন্দ্রেই আসেনি। নিজের বাবা বা স্বামী কাউকেই ভোট দেয়নি।’ রবিবার সন্ধ্যায় জামাই-শ্বশুরের কেন্দ্র দেবগ্রাম পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার কামাল আহাম্মদ খান শ্বশুরের জয়ের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বাবুল মিয়া তার মেয়েজামাই হুমায়ুনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু হুমায়ুন শ্বশুরের কথা না শুনে ভোটে দাঁড়ান। বাবার অছিয়ত তাই নির্বাচন করবেন বলে ঘোষণা দেন। উল্টো শ্বশুরকে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।

 

সর্বশেষ খবর