মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
উদ্ভাবন

মাছের মড়করোধে ভ্যাকসিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট


মাছের মড়করোধে ভ্যাকসিন

মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। দিন দিন মাছের উৎপাদন বাড়লেও ভ্যাকসিনের অভাবে প্রতি বছর নানা রোগে মারা যায় প্রচুর পরিমাণ মাছ। ফলে কাক্সিক্ষত উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন খামারিরা। মাছের মড়করোধে দেশে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভিত্তিতে ব্যবহার উপযোগী মাছের ভ্যাকসিন উদ্ভাবন  করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের মৎস্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি জানান, গবেষণায় দেখা গেছে ‘বায়োফ্লিম’ নামের ভ্যাকসিনটি স্বাদু পানিতে চাষকৃত মাছের এরোমোনাস হাইড্রোফিলা নামক ব্যাকটেরিয়াজনিত ক্ষত, আলসার, পাখনা ও লেজ পচা রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর। জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, চিলিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১৮ প্রজাতির মাছে ২৮ ধরনের ভ্যাকসিন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহার হলেও বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই ভ্যাকসিন মৎস্য চাষে নবদিগন্তের সূচনা করবে। মূলত স্বাদু পানির বিভিন্ন মাছসহ পাঙ্গাশ মাছের ব্যাকটেরিয়াজনিত মড়করোধে এই বায়োফ্লিম ভ্যাকসিনটি উদ্ভাবন হয়েছে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, ভ্যাকসিন খাওয়ানোর পর মাছের প্রত্যাশিত মড়করোধ করা সম্ভব।

 বায়োফ্লিম একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত ভ্যাকসিন যা, প্ল্যাক্টোনিক ব্যাকটেরিয়াকে ল্যাবরেটরিতে বায়োফ্লিম পর্যায়ে নেওয়ার মাধ্যমে অণুজীবের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধে বিশেষ বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। গবেষক ড. মামুন জানান, পাঙ্গাশ মাছের ওপর গবেষণা করে ভ্যাকসিনটি উদ্ভাবন করা হলেও ভ্যাকসিনটি স্বাদু পানিতে চাষযোগ্য ইন্ডিয়ান মেজর কার্প যেমন রুই, কাতলা, কই, শিং প্রভৃতি মাছের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী। প্রথমে গবেষণাগারে তৈরিকৃত বায়োফ্লিম ভ্যাকসিন নির্দিষ্ট মাত্রায় মাছের খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে খাওয়াতে হবে। পাঙ্গাশ মাছের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনটি শতকরা ৮৪ ভাগ কার্যকরী বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। অচিরেই ভ্যাকসিনটি নিয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন করা হলে দেশীয় বাজারে স্বল্পমূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়া সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর