শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
পিলখানা ট্র্যাজেডির ১২ বছর

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় শহীদদের স্মরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় শহীদদের স্মরণ

পিলখানায় শহীদদের স্বজনরা গতকাল শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। এ সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে নৃশংস হত্যাকান্ডে নিহতদের স্মরণ করা হয়েছে শ্রদ্ধা-ভালোবাসায়। গতকাল রাজধানীর বনানীর সামরিক কবরস্থানে নিহতদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান স্বজনরা। নিহত সেনা কর্মকর্তাদের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। পিলখানার হত্যাকান্ডের ১২ বছরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনও নিহতদের স্মরণ করেছে।

আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দফতরে পিলখানায় সংগঠিত বর্বরোচিত হত্যাকান্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শহীদ সদস্যদের ১২তম শাহাদতবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, এ উপলক্ষে বনানীস্থ সামরিক কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শাহাদতবরণকারীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতির পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আবু আশরাফ, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সে সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা শহীদ সেনা সদস্যদের সম্মানে স্যালুট প্রদান করেন। পরে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। বিএনপি : পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় দোষীদের চূড়ান্ত বিচারের রায় চলতি বছরের মধ্যেই কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ। এই হত্যাকান্ডের ১২ বছর উপলক্ষে গতকাল সকালে রাজধানীর বনানী সেনা কবরস্থানে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ দাবি জানান।  পিলখানা হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী ও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী যারা এখনো পর্যন্ত পর্দার অন্তরালেই রয়েছেন, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান সাবেক এই মন্ত্রী। গতকাল বেলা পৌনে ১১টায় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে দলীয় নেতারা নিহত সেনা সদস্যদের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এ সময় তারা নিহত সেনা কর্মকর্তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) শাহজাহান ওমর, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, বিএনপি নেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, কর্নেল (অব.) মো. ইসহাক, কর্নেল (অব.) মনীষ দেওয়ান, কর্নেল (অব.) কামরুজ্জামান, মেজর (অব.) মো. হানিফ, মেজর (অব.) সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) সাঈদুল ইসলাম, মেজর (অব.) মো. হাসান, শাহ খালেদ হাসান চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় পার্টি : বনানীর সামরিক কবরস্থানে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টি ও বিরোধী দলের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। এ সময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতী দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. হাবিবুর রহমান, এস এম ফয়সল চিশতী, ভাইস চেয়ারম্যান এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, ক্রীড়া সম্পাদক ও জাতীয় যুব সংহতির সদস্যসচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম-কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট আবু তৈয়ব, যুগ্ম-দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, কেন্দ্রীয় সদস্য আবদুস সাত্তার, আরিফুল ইসলাম রুবেল, মো. আলমগীর হোসেন, জিয়াউর রহমান বিপুল, মাসুদুর রহমান, মুশফিকুর রহমান প্রমুখ। এক যুগ আগে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর (বর্তমান নাম বিজিবি) সদর দফতর পিলখানাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহ করেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কিছু সদস্য। তারা পিলখানায় নারকীয় হত্যাকান্ড চালান। নিষ্ঠুর আচরণ ও পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন সামরিক কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা। দুই দিনব্যাপী ওই বিদ্রোহ শেষে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নৃশংস এই হত্যার ঘটনার মামলাটি এখন আইনি লড়াইয়ে চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। তবে এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা মামলাটি এখনো বিচারিক আদালতের গন্ডিও পেরোয়নি।

সর্বশেষ খবর