শনিবার, ৬ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা
প্রধানসহ গ্রেফতার ৩

নতুন বেশে অস্ত্র ও বিস্ফোরক সংগ্রহে মাঠে হুজি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামীর (হুজি) অপারেশন শাখার প্রধানসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। বৃহস্পতিবার রাতে যাত্রাবাড়ীর সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- মাইনুল ইসলাম ওরফে মাহিন ওরফে মিঠু ওরফে হাসান, শেখ সোহান সাদ ও মুরাদ হোসেন কবির। এরা সাংবাদিকতার বেশে অস্ত্র ও বিস্ফোরক সংগ্রহ করছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ইফতেখারুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী’-এর সক্রিয় সদস্য। তারা মাইনুল ইসলামের নেতৃত্বে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী পুনর্গঠন, পূর্ণাঙ্গ শূরা কমিটি প্রস্তুতকরণ, সংগঠনের অর্থদাতা এবং সদস্যদের কাছ থেকে অর্থের জোগান নিশ্চিতকরণ, ব্যাপকহারে সংগঠনের রিক্রুটমেন্ট, অস্ত্র সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ, কারাগারে আটক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের জামিনের ব্যবস্থাকরণ, বান্দরবান-নাইক্ষ্যংছড়ি পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় জমি লিজ নিয়ে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তারা বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় সংগঠনের বিস্তার ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন পরিচয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা কারাগারে আটক ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডাক্তার জাফর ও ২০০০ সালে কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামি মেহেদী হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খানের নির্দেশে সাংগঠনিক কাজ করছিলেন।

ডিএমপি থেকে আরও জানানো হয়, গ্রেফতার মাইনুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ সংগঠন হুজির প্রধান অপারেশন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি সাংবাদিকের বেশ ধারণ করে সংগঠনের দাওয়াতি কাজ, অর্থ সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে আসছিলেন। তার পরিকল্পনা ছিল ঢাকা শহরে বড় ধরনের নাশকতা করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা। তিনি ২০১৫ সালে হুজির শীর্ষ নেতা কারাবন্দী মুফতি মঈনউদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন।

আর গ্রেফতার সোহান সাদ সুনামগঞ্জের বিবিয়ানা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ঢাকায় মিরপুর বাঙলা কলেজে পড়ার পাশাপাশি একটি মাদরাসায় তিনি শিক্ষকতা করতেন। ২০১৬ সালে একুশে বইমেলায় নাশকতার ঘটনায় গ্রেফতার হন। এ ছাড়াও ২০১৭ সালে বিস্ফোরক মামলায় এবং ২০১৯ সালে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয় তাকে। জামিনে বের হয়ে তিনি মাইনুলের নেতৃত্বে হুজির সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করতেন। গ্রেফতার মুরাদ ব্যবসার আড়ালে হুজি সংগঠনের দাওয়াতি ও বায়তুল মালের দেখভালের দায়িত্ব পালন করতেন।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, ৫টি মোবাইল ফোন, একটি মাইক্রোফোন, একটি চাপাতি, দুটি ছোরা, ১০টি ডেটোনেটর, ১৭০টি বিয়ারিং লোহার বল, একটি স্কচটেপ, ৫ লিটার অ্যাসিড, তিনটি আইডি কার্ড ও একটি জিহাদি বই জব্দ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর