রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

শ্রীপুরে কারখানায় আগুন, গেট বন্ধ করার অভিযোগ

মৃত এক আহত ৪২

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

শ্রীপুরে একটি গার্মেন্ট কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে এক শ্রমিক নিহত ও কমপক্ষে ৪২ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১২ জনকে ঢাকা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার দক্ষিণ ভাংনাহাটী এলাকায় ঢাকা গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিং লিমিটেডে আগুনের এ ঘটনা ঘটে। গতকাল সকাল ১০টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। নিহত মাসুম সিকদার (২৩) ওই কারখানার ওয়েল্ডিং অপারেটর। তিনি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার চর কুসুমহাটি গ্রামের সূর্য সিকদারের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানান, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে কয়েকবার লাইনে বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ১০টার দিকে কারখানার কেমিক্যালের গুদামে আগুন দেখতে পাওয়া যায়। শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হতে চাইলে কর্তৃপক্ষ গেট খুলতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় পাশের পাঁচতলা ভবনের কিছু শ্রমিক ও স্টাফ আগুন নেভাতে গেলে কেমিক্যালের গ্যাসের গন্ধে অনেকেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। একপর্যায়ে শ্রমিকরা গেটে উপর্যুপরি আঘাত করলে কর্তৃপক্ষ গেট খুলে দিতে বাধ্য হন। গেট খুলে দেওয়ার পর আহত ও জ্ঞান হারানো শ্রমিকদের উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

ভাংনাহাটী গ্রামের নূরুল ইসলামের স্ত্রী খোদেজা বেগম (৭৫) বলেন, তার দুই নাতি নিখোঁজ রয়েছেন। তারা হচ্ছেন- মনির হোসেনের ছেলে ইউছুব (৩২) ও হাবিবুর রহমানের ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩০)। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন কারখানার স্যাম্পল শাখার শ্রমিক আবু হানিফ বলেন, তিনি কেমিক্যালের গুদামে আগুন দেখতে পেয়ে একজনকে সেখানে পড়ে যেতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে গেলে গ্যাসের গন্ধে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফিরে এলে নিজেকে হাসপাতালে দেখতে পান।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত ডা. কে এম রাজমুল আহসান জানান, কারখানার কমপক্ষে ৪২ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে ১২ জনকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে, ১০ জনকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ও ২০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের দেহের বাইরে দগ্ধের আলামত পাওয়া যায়নি। ধোঁয়ায় শ্বাসনালি ও দেহের ভিতরে ইনজুরি হয়ে থাকতে পারে। শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাদেক জানান, আগুন নেভানোর পর কেমিক্যালের গুদাম থেকে মাসুম সিকদারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি কেমিক্যালের গ্যাসে দম আটকে মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তার সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়নি। মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যাচ্ছি। 

এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক পরিচয় জেনে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. মিয়া রাজ জানান, আগুনের খবর শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কারখানার কেমিক্যাল গুদামে দুটি ইউনিট আধাঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুন লাগার সঠিক কারণ তাৎক্ষণিক নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।

সর্বশেষ খবর