রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

হুইল চেয়ারে ১০ কিমি. পাড়ি দিয়ে বই পড়েন প্রতিবন্ধী আনোয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

হুইল চেয়ারে ১০ কিমি. পাড়ি দিয়ে বই পড়েন প্রতিবন্ধী আনোয়ার

প্রতি সপ্তাহে এক দিন হুইল চেয়ারে ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে  মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রে যান প্রতিবন্ধী আনোয়ার হোসেন (২১)। রংপুর সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় হুইল চেয়ারে করেই কলেজে যাতায়াত করেন। রংপুর নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব নাজিরদিঘর এলাকার দিনমজুর শাহজাহান মিয়ার দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে অনোয়ারই বড়।

গতকাল সকালে আনোয়র জানালেন তার কষ্টের কথা। তার বয়স যখন তিন মাস তখন দোলনা থেকে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হন। বাবার আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় চিকিৎসার অভাবে শরীরের নিচের অংশ অবশ হয়ে যায়। সেই থেকে নামের আগে যুক্ত হয় প্রতিবন্ধী শব্দটি। প্রতিবন্ধী হলেও অদম্য ইচ্ছায় লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কয়েকটি প্রাইভেট পড়িয়ে সংসারে কিছুটা সচ্ছলতা আনার চেষ্টা করছেন। ছোটবেলা থেকে বই পড়ার নেশা তার। সেই নেশা এখনো রয়েছে। বাড়ি থেকে হুইল চেয়ারে ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র পাঠাগারে এসে আগের বই জমা দিয়ে নতুন নতুন বই গ্রহণ করেন। সব বই পড়া শেষ হলে আবার ফেরত দিয়ে আসেন। মাঝে-মধ্যে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি ও গণন্থাগারেও যান বই পড়ার নেশায়। পাঠাগার থেকে তিনি এ পর্যন্ত কয়েক শ বই নিয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘কারাগারের রোজনামচা’, ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বই দুটি তার খুব ভালো লেগেছে।  তিনি বলেন, জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হলে  বই পড়ার বিকল্প নেই।

পায়রাবন্দ স্মৃতিকেন্দ্র পাঠাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম দুলাল বলেন, প্রতিবন্ধী আনোয়ার হোসেন এ পাঠাগারের একজন ভালো পাঠক। তিনি বই নিয়ে যান আবার সঠিক সময়ে বই ফেরতও দিয়ে যান।

সর্বশেষ খবর