মঙ্গলবার, ৯ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

বিক্ষুব্ধ মিয়ানমারে বাড়ছে লাশ

প্রতিদিন ডেস্ক

মিয়ানমারে সামরিক শাসনবিরোধী বিক্ষোভে প্রতিদিনই মৃত্যু ঘটছে। গতকালও পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আলজাজিরা।

খবরে বলা হয়, গতকাল মিয়ানমারে পুলিশের গুলিতে আরও দুজন বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই দুই বিক্ষোভকারীর মাথায় গুলি লেগেছিল। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত বেশ কিছু ছবিতে দেখা গেছে উত্তরাঞ্চলীয় মিতকিনা শহরে দুজনের লাশ রাস্তায় পড়ে আছে। নিহতরা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস ও গুলি ছুড়েছে পুলিশ। সে সময় বেশ কয়েকজন পুলিশের গুলিতে হতাহত হন। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি এবং আরও বেশ কয়েকজন মিলে রাস্তা থেকে লাশ সরিয়েছেন। দুজনকে মাথায় গুলি করা হয় এবং তারা ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ছাড়া পুলিশের গুলিতে আরও তিনজন আহত হয়েছেন। ২০ বছর বয়সী এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘বেসামরিক লোকজনকে গুলি করে হত্যা কতটা অমানবিক! শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করার অধিকার আমাদের আছে।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গতকাল দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে গুলিবর্ষণ করেছে সেনারা। বিক্ষোভকারীদের জমায়েত ঠেকাতে জায়গায় জায়গায় গাড়ি থামিয়ে চেক করছে সেনারা। এদিকে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দেশটির বৃহত্তম ইয়াঙ্গুন শহরের দোকানপাট, কারখানা এবং ব্যাংকের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এর আগে সেনাশাসকদের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে ধর্মঘট ডাকে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ট্রেড ইউনিয়নগুলো। এ ছাড়া নির্মাণ, কৃষি ও পণ্য উৎপাদনসহ অন্তত নয়টি খাতের ট্রেড ইউনিয়ন ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছে। তাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী জনগণের ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে।

তাই গণতন্ত্রের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে। এ মুহূর্তে ব্যবসা ও অর্থনীতি সচল রাখার অর্থ হচ্ছে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করা। উল্লেখ্য, গত মাসের ১ তারিখ বেসামরিক সরকারকে সরিয়ে দেশের ক্ষমতা দখল করে নেয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তার কয়েক দিন পরই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামে দেশটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সামরিক সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন পর্যন্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এদিকে মিয়ানমারে সহিংসতা এবং নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বেগ জানিয়ে দেশটির সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা কর্মসূচি বাতিল করেছে অস্ট্রেলিয়া। একই সঙ্গে বেসামরিক মানুষের ওপর সহিংসতা চালানো থেকে বিরত থাকতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যারিজ পায়ান। তিনি বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীকে ধৈর্য ধারণ ও বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান অব্যাহত রাখছি।’

সর্বশেষ খবর