শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

পুলিশের ভুলে নির্দোষ মিন্টু মোল্লার চার মাস ধরে কারাভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

আসামির নামের একাংশের এবং আসামির বাবার নামের সঙ্গে হুবহু মিল থাকায় কোনো দোষ না করে যশোরের শার্শা উপজেলার দীঘিরপাড়া গ্রামের আশরাফ আলী মিন্টু মোল্লাকে চার মাস ধরে কারাভোগ করতে হয়েছে। প্রকৃত আসামির নাম আশরাফ আলী। যাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল তার নাম আশরাফ মিন্টু মোল্লা। তবে ভাগ্য ভালো। বিষয়টি বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস  ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)-এর নজরে পড়ায় মিন্টু মোল্লা ১০ মার্চ আদালতের মাধ্যমে অব্যাহতি পেয়েছেন।

আশরাফ আলী মিন্টু মোল্লা রিকশা ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কখনো কখনো দিনমজুরের কাজও করতেন। তিনি বলেন, ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর রাতে বেনাপোল থানার দারোগা (সাব ইন্সপেক্টর) মাসুম তার বাড়িতে এসে বলেন, তুমি এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এই দেখ গ্রেফতারি পরোয়ানা। মিন্টু মোল্লা         বলেন, আমি সেই আসামি নই। আমি আশরাফ আলী মিন্টু মোল্লা। দারোগা কোনো যুক্তি শুনলেন না। আটক করে নিয়ে গেলেন মিন্টু মোল্লাকে। পরদিন সকালে তার পরিবারের লোকজন তার জন্মনিবন্ধন সনদের কপি নিয়ে থানায় গেলেও তাকে ছাড়া হয়নি। মিন্টু মোল্লাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। আশরাফ আলী মিন্টু মোল্লা কারাগারে দরবার ফাইলে অভিযোগ করেন আশরাফ আলীর পরিবর্তে তাকে জেল খাটতে বাধ্য করা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। গত শনিবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে যান লিগ্যাল এইড কমিটির সচিব। এ সময় মিন্টু তার কাছেও বিষয়টি জানান। এরপর লিগ্যাল এইডের আইনজীবীরা বিষয়টি আদালতকে অবহিত করেন। আদালত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক মিন্টুকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। এদিকে মিন্টু মোল্লার স্ত্রী ফাহিমা বেগম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, দেরিতে হলেও তার স্বামী ন্যায়বিচার পেয়েছেন।

ব্লাস্টের কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট মোস্তফা হুমায়ুন কবীর বলেন, পুলিশ একটু সতর্ক হলে ও ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করলে একজন নিরপরাধ মানুষকে চার মাস জেল খাটতে হতো না।

সর্বশেষ খবর