সুনামগঞ্জের শাল্লায় এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হেফাজতে ইসলাম নেতা আল্লামা মামুনুল হককে নিয়ে স্ট্যাটাস পোস্ট করার জের ধরে ওই যুবকের গ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের ঘরবাড়ি এবং উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের খবর পাওয়া গেছে। ওই পোস্টের কারণে অভিযুক্ত যুবককে আগের রাতেই গ্রেফতার করে শাল্লা থানা পুলিশ। গতকাল সকাল ৯টার দিকে শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত সহস্রাধিক মানুষের আকস্মিক সংঘবদ্ধ হামলায় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন গ্রামের অনেক নিরীহ মানুষ। পরবর্তীতে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তৎক্ষণাৎ হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ঘটনার পর পর সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে নিয়ে নোয়াপাড়া গ্রামের ঝুমন দাশ আপন নামের এক যুবকের ফেসবুক আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করা হয়। ওই স্ট্যাটাসের জেরে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শাল্লার শাঁসকাই বাজারে আপনকে আটকের পর এলাকাবাসী পুলিশে সোপর্দ করে। বুধবার সকালে পুলিশ তাকে জেলহাজতে পাঠায়। শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করার কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যে কারণে হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের গুপেন্দ্র দাশের ছেলে ঝুমন দাশ আপনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল থেকে জানান, ফেসবুক স্ট্যাটাসের জেরে মামুনুল হকের অনুসারীরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। হাওরের খুবই প্রত্যন্ত এলাকায় পড়েছে গ্রামটি। আমরা ঘটনাস্থলে এসে নিরাপত্তার ব্যাপারে গ্রামবাসীকে আশ্বস্ত করেছি। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সাবেক সভাপতি মাওলানা আবদুল বছির বলেন, ওই যুবককে পুলিশ গ্রেফতারের পর আর কিছু থাকতে পারে না। এরপরও অতিউৎসাহী হয়ে যারা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটিয়েছে, আমি তার নিন্দা জানাই। জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবি জানাই।