বুধবার, ২৪ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

৩২ বছর পর বাবার খুনিকে হত্যা

মির্জা মেহেদী তমাল

৩২ বছর পর বাবার খুনিকে হত্যা

১৯৮৭ সালে আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুব দিনে-দুপুরে আবদুস সাত্তার তালুকদারকে জবাই করে হত্যা করেন। ঘটনার ৩২ বছর পর খুন হন সেই খুনি আইয়ুব। খুনি আর কেউ নন, সাত্তারের দুই ছেলে। বাবার খুনের প্রতিশোধ নিতেই তারা খুন করান আইয়ুবকে। দীর্ঘ ৩২ বছর চেষ্টা করে ভাড়াটে লোক দিয়ে বাবার খুনি আইয়ুবকে গুলি করে হত্যা করান দুই ছেলে মহসিন ও হাছান। চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে এমন স্বীকারোক্তি দেন মহসিন ও হাছানের ভাড়াটে পাঁচ খুনি। ঘটনাটি ২০১৯ সালের। খুনের পর চট্টগ্রামের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও রাঙ্গামাটির রাজস্থলী থেকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পিবিআই। গ্রেফতাররা হলেন- আবদুল আজিজ প্রকাশ মানিক, মো. আজিম, আবদুল জলিল, মো. রুবেল ও মো. মহিন উদ্দিন।

পিবিআই জানায়, রাঙ্গুনিয়ায় আবদুস সাত্তার তালুকদারকে প্রকাশ্যে জবাই করে হত্যা করেন আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুব। ঘটনার পর বাবা হত্যার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন সাত্তারের দুই ছেলে। তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেন বাবার খুনিকে হত্যা করতে। কিন্তু

সুযোগমতো তারা পান না আইয়ুবকে। এভাবেই কেটে যায় ৩২ বছর। সবাই ভুলে গেলেও সাত্তারের দুই সন্তান কিছুতেই ভুলতে পারেননি। তারা প্রতিজ্ঞা করেন, খুনের জবাব খুনেই দেবেন। অবশেষে ২০১৯ সালে ভাড়াটে খুনির সাহায্যে মো. আইয়ুবকে গুলি করে হত্যা করান মহসিন ও হাছান।

পিবিআই জানায়, গ্রেফতার পাঁচজন হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আইয়ুবকে হত্যা করতে মহসিন ও হাছান তাদের ভাড়া করেছিলেন। ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুবকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে আইয়ুবের স্ত্রী রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। রাঙ্গুনিয়া থানার পুলিশ সাড়ে তিন মাস তদন্ত করে হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে পারেনি। পরে আদালত মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়। কে এই আইয়ুব? চট্টগ্রামের ত্রাস হিসেবে পরিচিত আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুর। তার হাতে বিভিন্ন সময় খুন হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর, রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। তার বিরুদ্ধে ডজনের ওপর হত্যা মামলা ছিল। নৃশংস ঘটনার জন্য আইয়ুবকে মানুষ ভয় পেত। আইয়ুবের বিরুদ্ধে যত হত্যাকান্ডের অভিযোগ রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ১৯৮৫ সালে অবসরপ্রাপ্ত মেজর ওয়াদুদ হত্যা, ১৯৮৬ সালে মেহেরুজ্জামান হত্যা, ১৯৯১ সালে মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহান হত্যা, একই সালে গফুরকে হত্যা, ১৯৯২ সালে নুরুল ইসলাম হত্যা। এ ছাড়া ১৯৯১ সালে মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহান হত্যাকান্ডের সাক্ষ্য দিতে আদালতে যাওয়ার সময় নিহতের দুই ছেলে কবির ও সবুরকে ধরে খেঁজুর কাঁটা দিয়ে চোখ উপড়ে ফেলেন আইয়ুব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর