রবিবার, ২৮ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা
মাথায় গুলি চালানোর ঘোষণা

মিয়ানমারে এক দিনেই নিহত ৯০ বিক্ষোভকারী

প্রতিদিন ডেস্ক

মিয়ানমারে এক দিনেই নিহত ৯০ বিক্ষোভকারী

মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে গতকালও সংঘর্ষ হয় সরকারি বাহিনীর -এএফপি

মিয়ানমারে সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী দিবস ছিল গতকাল। এর আগেই জান্তাবাহিনী ঘোষণা করেছিল, এদিন বিক্ষোভ করলে সরাসরি মাথায় গুলি চালানো হবে। সে অনুযায়ী গতকাল হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ শুরু করলে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালিয়ে অন্তত ৯০ জন বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স।

খবরে বলা হয়, শনিবার ইয়াংগন, মান্দালয়সহ বিভিন্ন শহরে ‘মাথায়, পিঠে গুলিবিদ্ধ’ হওয়ার হুমকি উপেক্ষা করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসার পর নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর চড়াও হয়। ইয়াংগনে দালা শহরতলির একটি থানার বাইরে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত চারজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার নাও। বাণিজ্যিক এ রাজধানীর উত্তর দিকের জেলা ইনসেইনে একটি বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে  স্থানীয় অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবল দলের এক খেলোয়াড়ও আছেন বলে জানিয়েছেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাসিওতে তিন এবং ইয়াংগনের কাছে বাগো অঞ্চলে চারজন নিহত হয়েছেন বলে খবর দিয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হোপিন শহরেও এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। মান্দালয়ে বিভিন্ন ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে মিয়ানমার নাও। রক্ত ঝরেছে মান্দালয়ের কাছে অবস্থিত সাগাইং এলাকাসহও আরও কিছু অঞ্চলে। সব মিলিয়ে শনিবার মিয়ানমারজুড়ে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে মিয়ানমার নাও। ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাদের জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী সিআরপিএইচের মুখপাত্র ড. সাসা একটি অনলাইন ফোরামকে জানান, সশস্ত্র বাহিনীর জন্য দিনটি ছিল লজ্জা দিবস। তিন শতাধিক নিরাপরাধ বেসামরিক মানুষকে হত্যার পর সামরিক বাহিনীর জেনারেলরা সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করেছেন। খবরে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনে মোট নিহতের সংখ্যা এখন ৩৮০ ছুইছুই। গত শুক্রবার পর্যন্ত এ সংখ্যা ৩২৮-এ ছিল বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের ঘটনা পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)। এদিকে গতকাল শনিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাজধানী নেপিদোতে সামরিক কুচকাওয়াজে সভাপতিত্ব করার পর মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেল মিন অং হ্লাইং নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। যদিও কবে তিনি এ প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন, তার সময়সীমা বলেননি। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের সুরক্ষায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী পুরো জাতির সঙ্গে হাতে হাত রেখে কাজ করতে চায়। যে দাবিতে নৃশংস কর্মকান্ড ঘটানো হচ্ছে, যার ফলে দেশের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা বিনষ্ট হচ্ছে সেটা সঠিক দাবি নয়।’ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের কারণ ব্যাখ্যায় হ্লাইং বলেন, ‘গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা অং সান সু চি এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির বেআইনি কার্যকলাপের কারণে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে।’ উল্লেখ্য, এরই মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়ায়  পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সেনা পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর