শুক্রবার, ২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রতিদিনই ভাঙছে রেকর্ড মৃত্যু ৫৯, আক্রান্ত ৬৪৬৯

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিদিনই ভাঙছে রেকর্ড মৃত্যু ৫৯, আক্রান্ত ৬৪৬৯

আবারও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে করোনাভাইরাস। প্রতিদিনই ভাঙছে সংক্রমণ রেকর্ড। বাড়ছে মৃত্যু। গতকাল দেশে প্রথমবারের মতো এক দিনে করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ৪৬৯ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৬৪ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটির কারণে মৃত্যু হয়েছে আরও ৫৯ জনের। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ১০৫ জনে।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের খবর আসে। বছর শেষে সংক্রমণ কমতে শুরু করে। গত ফেব্রুয়ারিতে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩০০-এর নিচে নেমে আসে। মার্চে এসে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ভাইরাসটি। গত ২৯ মার্চ এক দিনে ৫ হাজার ১৮১ জন রোগী শনাক্তের তথ্য জানানো হয়, যা ছিল করোনা মহামারীর পুরো সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর পর থেকে প্রতিদিনই ৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। ৩১ মার্চ পূর্বের সব রেকর্ড ভেঙে ৫ হাজার ৩৫৮ জন রোগী শনাক্ত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এক দিনের ব্যবধানেই রোগী শনাক্ত বেড়েছে ১ হাজার ১১১ জন।

ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ হার ও মৃত্যু : স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ হাজার ১৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ মানুষের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন (৩১ মার্চ) শনাক্তের হার ছিল ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ, ৩০ মার্চ ছিল ১৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ২৯ মার্চ ছিল ১৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও ২৮ মার্চ ছিল ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ ছাড়া প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৮ মার্চ থেকে গতকাল ১ এপ্রিল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে দৈনিক মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জন, ৪৫ জন, ৪৫ জন, ৫২ জন ও ৫৯ জন।

কমেছে সুস্থতা, ফুরিয়ে আসছে হাসপাতালের শয্যা : এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ হাজার ৫৩৯ জন, যা শনাক্তের

চেয়ে ৩ হাজার ৯৩০ জন বেশি। সুস্থতার চেয়ে রোগী শনাক্ত বাড়ায় ফুরিয়ে আসছে হাসপাতালের শয্যা। গতকাল ঢাকার ১০টি কভিড-১৯ ডেডিকেটেড সরকারি হাসপাতালের ২ হাজার ৫১১টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ফাঁকা ছিল মাত্র ২০৫টি। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে শয্যা সংখ্যার চেয়ে ১৪৭ জন ও রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে শয্যা সংখ্যার চেয়ে ৩৬ জন বেশি করোনা রোগী ভর্তি ছিল। এ ছাড়া সরকারি হাসপাতালগুলোর মোট ১০৮টি আইসিইউর মধ্যে ফাঁকা ছিল মাত্র ৪টি। ঢাকার বেসরকারি হাসপাতালের ২৯৬টি আইসিইউর মধ্যে ফাঁকা ছিল ৫১টি। সারা দেশের ৫৮৬টি আইসিইউর মধ্যে গতকাল ফাঁকা ছিল ২১৬টি। অথচ, গত ১ ফেব্রুয়ারিও ঢাকায় ১৯৪টি ও সারা দেশে ৪১৩টি আইসিইউ ফাঁকা ছিল। উচ্চ সংক্রমণ ৩১ জেলায় : দেশের ৩১টি জেলায় করোনার উচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। জেলাগুলো হলো- ঢাকা, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, মুন্সীগঞ্জ, সিলেট, নরসিংদী, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, বরিশাল, রাজশাহী, বগুড়া, নড়াইল, নীলফামারী, গাজীপুর, ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, যশোর, মাদারীপুর, নওগাঁ, রংপুর, কিশোরগঞ্জ, নাটোর, টাঙ্গাইল ও কক্সবাজার।

 গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৫৯ জনের মধ্যে ৩৫ জন ছিলেন পুরুষ ও ২৪ জন নারী। বয়স বিবেচনায় ৩০ জন ছিলেন ষাটোর্ধ্ব, ১৩ জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, ১১ জন চল্লিশোর্ধ্ব, চারজন ত্রিশোর্ধ্ব ও একজনের বয়স ছিল ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ৪০ জন ঢাকা, পাঁচজন চট্টগ্রাম, পাঁচজন সিলেট, চারজন খুলনা, দুজন রাজশাহী, দুজন রংপুর ও একজন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যুর ৫৭ শতাংশই হয়েছে ঢাকা বিভাগে।

সর্বশেষ খবর