শনিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনায় আক্রান্ত ছাড়াল ১৩ কোটি

এক দিনে মৃত্যু ১২ হাজারের কাছাকাছি

প্রতিদিন ডেস্ক

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের তান্ডব আগের অবস্থাকে ছাড়িয়ে চলেছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন দেশে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যু। গতকাল সকাল পর্যন্ত বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ কোটি ৩ লাখে পৌঁছে যায়। আর মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৮ লাখ ৪৩ হাজারে। গত বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় মারা যান ১১ হাজার ৭৬৭ জন এবং আক্রান্ত হন ৭০ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি। সূত্র : ওয়ার্ল্ডোমিটার।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৬১১ জন মারা গেছেন। এ ছাড়া করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ কোটি ১২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৩৯ জনের। আর সুস্থ হয়েছে ২ কোটি ৩৭ লাখ ৫৪ হাজার ৩৯১ জন। যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ব্রাজিল। আক্রান্ত ও মৃত্যু বিবেচনায় দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়। লাতিন আমেরিকার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ২৮ লাখ ৪২ হাজার ৭১৭ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৫৫৯ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ১২ লাখ ৩৯ হাজার ৯৯ জন। তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। এশিয়ার মধ্যে ভারত করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১ কোটি ২৩ লাখ ২ হাজার ১১০ জন। মারা গেছেন ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪২৮ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ১৫ লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন। করোনাভাইরাস শনাক্তের তালিকায় রাশিয়াকে ছাড়িয়ে চারে উঠে এসেছে ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৬ লাখ ৯৫ হাজার ৮২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৯৫ হাজার ৯৭৬ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৯৬ হাজার ১৬৬ জন। এদিকে তালিকার পঞ্চম স্থানে থাকা রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত ৯৯ হাজার ২৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনাক্ত ৪৫ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৪ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪১ লাখ ৭৬ হাজার ৪১৯ জন। এরপর করোনাভাইরাস শনাক্তের দিক থেকে তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাজ্য, ইতালি, তুরস্ক, স্পেন ও জার্মানি। আর এ তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩৪তম।

ভারতে ছয় মাস পর এক দিনে ৮১ হাজারের বেশি রোগী : করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপটের মধ্যে ছয় মাস পর এক দিনে ৮১ হাজারের বেশি রোগী দেখল ভারত। গতকাল দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৮১ হাজার ৪৬৬ রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিতে গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বরের পর এক দিনে আর এত রোগী মেলেনি।

এখন সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে, তাতে আর কয়েক দিনের মধ্যে দেশটিতে দৈনিক শনাক্ত লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। দেশটিতে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে টিকাদান কর্মসূচির গতিও বেড়েছে; তার মধ্যেই সংক্রমণের নতুন ঊর্ধ্বগতিতে উদ্বিগ্ন অনেক রাজ্য লোকজনের চলাফেরা সীমিত করার পাশাপাশি নানান বিধিনিষেধ আরোপের কথা ভাবছে। ভারতে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মহারাষ্ট্রে ২৪ ঘণ্টায় ৪৩ হাজার ১৪৩ জন নতুন কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ। মহামারী শুরুর পর পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটিতে এক দিনে আর কখনই এত রোগী পাওয়া যায়নি। কয়েক দিন ধরে রাজ্যটিতে রাত্রিকালীন কারফিউও চলছে, কর্তৃপক্ষ এখন রাজ্যটির রেল যোগাযোগ ও ধর্মীয় স্থানগুলো বন্ধ করে দেওয়ার মতো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে। গত বছরের শুরুর দিকে ভারত সরকার দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন দিয়েছিল; অর্থনীতির কথা বিবেচনায় নিয়ে কয়েক মাস পর তারা ধীরে ধীরে লকডাউনের শর্তগুলো শিথিল করে নেয়। ২০২০ সালের শেষদিকে দেশটিতে সংক্রমণের হারও কমতে দেখা যায়। আগের লকডাউনের ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে দেখা দেওয়া সংক্রমণের নতুন ঢেউ ক্ষমতাসীন সরকারের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের। দেশটির রাজ্যগুলোর মধ্যে মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, পাঞ্জাব, কেরালা, তামিলনাড়ু, গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশেও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে।

সর্বশেষ খবর