শনিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

শঙ্খচিল উদ্ধার

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

শঙ্খচিল উদ্ধার

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আহত একটি শঙ্খচিল উদ্ধার করা হয়েছে। শঙ্খচিলটির একটি ডানা ভাঙা। বর্তমানে এটি শহরতলির সবুজবাগে সোহেল শ্যামের বাসায় আছে। গত শুক্রবার উপজেলার ভূনবীর থেকে এটা উদ্ধার করেন প্রকৃতিপ্রেমী সোহেল শ্যাম ও শৌখিন ফটোগ্রাফার খোকন থৌনাউজম। সোহেল শ্যাম জানান, তিনি শিক্ষক তারিক হাসানের কাছ থেকে জানতে পারেন ভূনবীর ইউনিয়নে জোনায়েদ নামে এক ব্যক্তি আহত একটি শঙ্খচিল উদ্ধার করেছেন। তারা জোনায়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শঙ্খচিলটি নিয়ে আসেন। বর্তমানে চিলটি তাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। এটাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করছেন তারা। সুস্থ হয়ে উঠলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। পাখিবিশারদরা জানান, শঙ্খচিলের ইংরেজি নাম Brahminy Kite. আর বৈজ্ঞানিক নাম Haliastur indus. এরা অ্যাক্সিপিট্রিডি পরিবারের সদস্য। বাংলাদেশ ছাড়াও উপমহাদেশের সব জায়গায় এবং অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পাখিটি সুপরিচিত। নদী-নালা, জলাশয়ের আশপাশে এদের বেশি দেখা যায়। শঙ্খের মতো সাদা এদের মাথা, তাই এদের নাম শঙ্খচিল। ডানা ও শরীরের অন্যান্য অংশ খয়েরি। ঘাড়, বুক, পেটের তলার পালকের ওপর মরিচা ধরা খাড়া ছোট রেখা থাকে। ঠোঁট ছোট, লেজ গোলাকার ডগাযুক্ত। শঙ্খচিলের দৈর্ঘ্য ৭৬-৮৪ সেমি। এরা মাছ ও জলজপ্রাণী খেয়ে জীবন ধারণ করে। ছোট সাপ, হাঁস-মুরগির বাচ্চা এদের প্রিয় খাদ্য। দক্ষিণ এশিয়ায় শঙ্খচিলের প্রজনন ঋতু ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল। এরা বাসা বাঁধে উঁচু স্থানে। ডিম পাড়ে দুটো। ডিমে তা দেয় শুধু স্ত্রী পাখিটি। তবে মা-বাবা দুজনে মিলে বাচ্চা বড় করে। ২৬ থেকে ২৯ দিন পর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকে। জলাশয়ের পাশে বড় বড় ঝাঁকে বাস করে। ডানা মেলে শূন্যে ভেসে থাকে। প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণবিষয়ক গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ‘শঙ্খচিল হলো সাইটেস আইন আন্তর্ভুক্ত একটি পাখি। এরা আমাদের পরিবেশের বন্ধু। মরা পচা জিনিস খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। প্রকৃতির প্রয়োজনেই এদের টিকেয়ে রাখতে হবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর