সোমবার, ৫ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

যুক্তরাষ্ট্রে তিন মাসে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ১০ হাজার ৮১৬

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

করোনা সত্ত্বেও এ বছর ৩ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের গুলিতে নিহত হয়েছেন ১০ হাজার ৮১৬ জন। বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় এমন বন্দুকবাজি ঘটছে বলে ধারণা করা হয়। সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, গত বছর নৃশংসতায় প্রাণ যায় ১৯ হাজার ২২৩ জনের। আরও ২৪ হাজার আমেরিকান মারা যান বন্দুকের গুলিতে, যার অধিকাংশই আত্মহত্যা ছিল। বন্দুকের গুলিতে নিহত হওয়ার এ সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৩৩ ভাগ বেশি। আর চলতি বছরের ৩ এপ্রিল পর্যন্ত নির্বিচার গুলিবর্ষণে নিহত হয়েছেন ২৭ জন। এর মধ্যে গত তিন সপ্তাহেই মারা গেছে ২২ জন। এর মধ্যে দুই পুলিশ অফিসারও রয়েছেন। অর্থাৎ দিন যত যাচ্ছে এক শ্রেণির মানুষ কর্তৃক অসহায় মানুষের জীবন কেড়ে নেওয়ার প্রবণতাও বেড়েই চলছে। এমনকি এ বছর ভিকটিমের মধ্যে শিশুও রয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার চেয়ে বর্ণ-গোত্র বিদ্বেষ প্রভাব ফেলছে এ অপরাধে। গত বছরের মে মাসে মিনেসোটায় জর্জ ফ্লয়েডকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ চরমে উঠেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে টালমাটাল অবস্থা তৈরি হলে এই যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সিটিতে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়। দোকান ভাঙচুর, লুটতরাজের ঘটনাও ঘটেছে বিক্ষোভের আড়ালে। একদিকে পুলিশি আচরণের নিন্দা, প্রতিবাদ এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি, আরেক দিকে নিরীহ মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যায় প্রবৃত্ত হয় উগ্রপন্থি অথবা করোনায় মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়া কিছু লোক।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ বলছে, এ বছর ৩ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের গুলিতে নিহত হয়েছে মোট ১০ হাজার ৮১৬ জন। এর মধ্যে নিজের পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ৬ হাজার ১৩৮ জন। আর ঘাতকের বুলেটে প্রাণ কেড়েছে অবশিষ্ট ৪ হাজার ৬৭৮ জনের। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৭৩। গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৮ হাজার ৩১৯ আমেরিকান। আহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৪১।  নির্বিচার গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১২১টি।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বন্দুকের গুলিতে মারা গেছে ১৫ হাজার ২০৮ জন। সে বছরে নিজ আগ্নেয়াস্ত্রে কতজন আত্মহত্যা করেছে সে তথ্য এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি। তবে ২০১৮ সালে মারা গেছে মোট ২৪ হাজার ৪৩২ জন। ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার ৮৫৪। প্রসঙ্গত, এমন অবস্থা বন্ধে গত নির্বাচনের আগে জো বাইডেন অঙ্গূকার করেন। সে অনুযায়ী ডেমোক্র্যাটদের ভোটে প্রতিনিধি পরিষদে একটি বিল পাস হলেও সিনেটে রিপাবলিকানদের অনীহার কারণে তা ঝুলে রয়েছে। সেই বিলে বলা হয়েছে যে, মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয়কারীর অতীত রেকর্ড পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। অর্থাৎ যারা অপরাধী বা সব সময় গরম মেজাজ নিয়ে চলাফেরা করে তাদের কাছে মারাত্মক অস্ত্র বিক্রি করা যাবে না।

সর্বশেষ খবর