শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

মেলায় নিষেধাজ্ঞার প্রভাব

মোস্তফা মতিহার

মেলায় নিষেধাজ্ঞার প্রভাব

ভিজে যাওয়া বই গতকাল মেলা চত্বরে রোদে শুকাতে দেখা যায় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

মেলার ১৯তম দিনে গতকাল বাংলা একাডেমির একুশে গ্রন্থমেলায় ছিল পুরো নিষেধাজ্ঞার প্রভাব। ছিল না ভিড়। ভুতুড়ে পরিবেশে এ দিন অলস সময় কাটিয়েছেন স্টলগুলোর বিক্রেতারা।

প্রকাশক  ও তাদের প্রতিষ্ঠানে যতজন কর্মরত রয়েছেন মেলায় আগতদের সংখ্যা ছিল এর অর্ধেকের চেয়েও কম। এ দিন মেলায় প্রবেশদ্বারে দায়িত্বরতরা মেলার প্রবেশদ্বার খোলা থেকে বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অলস সময় কাটিয়েছেন। গণমাধ্যমকর্মী ও মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশকদের ছাড়া বইপ্রেমীদের এ দিনের মেলায় খুঁজেই পাওয়া যায়নি। সব প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরাও আসেননি মেলায়। আগের দিন রবিবারেই অনেক প্রকাশক তাদের প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মীর সংখ্যাও কমিয়ে আনেন। ফলে জনমানবহীন মেলায় ছিল ভুতুড়ে পরিবেশ। অন্যদিন বইপ্রেমীদের পরিবর্তে দর্শনার্থী দেখা গেলেও এ দিন দর্শনার্থীও ছিল হাতে গোনা কয়েকজন। এই পরিবেশে মেলায় প্রকাশক, বিক্রয়কর্মী ও গণমাধ্যমের দখলে ছিল মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণ। প্রকাশকদের বেশিরভাগই এখন মেলার বিপক্ষে। মেলা চালু রেখে প্রকাশকদের আরও বেশি ক্ষতি হচ্ছে বলেও মনে করেন বেশিরভাগ       প্রকাশক। তাদের প্রশ্ন, ‘লকডাউনে যদি মানুষই মেলায় না আসে তাহলে আমরা বই বিক্রি করব কার কাছে?’ তারা বলেন, করোনা বৃদ্ধিতে     মানুষ যখন বাসা থেকেই বের হতে ভয় পাচ্ছেন তখন মেলায় আসবেন কীভাবে? একদিকে গণপরিবহন বন্ধ, অন্যদিকে করোনা বাড়ছে- সব কিছু মিলিয়ে মেলার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। প্রকাশকদের বেশিরভাগই বলেন, স্টল ও প্যাভিলিয়নের ভাড়া ফেরত দিতে হবে বলে এই লকডাউনেও তারা মেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলা একাডেমির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, মেলা বন্ধ ও সচল রাখার বিষয়ে একাডেমি কর্তৃপক্ষের কোনো হাত নেই। সরকারের উচ্চ মহল থেকে যে নির্দেশনা আসছে তারা শুধু সেই নির্দেশনাই বাস্তবায়ন করছেন।

ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি : এদিকে রবিবারের কালবৈশাখী ঝড়ে অনেক প্রকাশনা সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট অংশের প্রায় ১৫টির মতো স্টলের বই ভিজে একাকার হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভেজা বইগুলো রোদে শুকাতে দেখা গেছে প্রকাশনা সংস্থায় কর্মরতদের। মেলা থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন এই অংশের প্রায় ১৫টি স্টলের মধ্যে বেশি বই ভিজেছে আদর্শ প্রকাশনীর। অন্যদিকে টিএসসি অংশের কয়েকটি স্টলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঝড়ের তান্ডবে। মেলা যত চলতে থাকবে প্রকাশকরা তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন- এমন যুক্তি তুলে আজ মঙ্গলবার থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট অংশের প্রায় ৩০টির মতো স্টল খুলবে না বলে জানিয়েছেন এই অংশের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ইন্তামিনের কর্ণধার এ এস এম ইউনুছ। তার মতে, মেলায় আসা ও দুপুরের খাওয়া বাবদ যে খরচ তাও বিক্রি হচ্ছে না। সুতরাং মেলা বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।

নতুন বই : গতকাল মেলার ১৯তম দিনে নতুন বই এসেছে ২৮টি। এর মধ্যে  উপন্যাস ১টি, প্রবন্ধ ৫টি, কবিতা ১০টি, ছড়া ১টি, শিশুসাহিত্য ১টি, জীবনী ২টি, মুক্তিযুদ্ধ ১টি, নাটক ১টি, ভ্রমণ ১টি, ইতিহাস ৩টি, বঙ্গবন্ধুবিষয়ক ১টি ও অন্যান্য ১টি বই। 

সর্বশেষ খবর