বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

নরসিংদীতে একে একে পাঁচজনকে কোপাল যুবক, দুজন নিহত

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীর চরাঞ্চলে ভাই ও নানাসহ একে একে পাঁচজনকে ছুরিকাঘাত করেছেন এক যুবক। এদের মধ্যে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বাকি তিনজন। তাদের দুজনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে সেন্টু মিয়া নামে অপর গুরুতর একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মেঘনা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চল সগরিয়াপাড়া গ্রামে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন অভিযুক্ত ইউনুস আলীকে আটক করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ইউনুস আলী (৩০) প্রবাসী মো. মান্নান মিয়ার ছেলে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন চরাঞ্চলের সগরিয়াপাড়া গ্রামের ফজল        মিয়ার ছেলে ফরহাদ মিয়া (৫০) এবং একই গ্রামের মৃত দেওয়ান আলীর ছেলে আলী আজগর (৬৫)। সেন্টু ছাড়া অন্য দুই আহত ব্যক্তি হলেন অভিযুক্ত ইউনুসের মামাতো ভাই আল আমিন মিয়া এবং তার নানা। ইউনুসের নানার নাম তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চল সগরিয়াপাড়া গ্রামের মানসিক ভারসাম্যহীন ইউনুস সকালে মায়ের সঙ্গে রাগারাগি বাড়ি থেকে বের হয়ে যাচ্ছিলেন। তার মামাতো ভাই আল আমিন ও নানা এতে বাধা দেন। এ সময় ইউনুস ক্রুদ্ধ হয়ে মামাতো ভাই আল আমিন ও নানাকে ছুরিকাঘাত করেন। এরপর ছুরি হাতে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। গ্রামবাসী ফরহাদ মিয়া বাড়ির অদূরে তার কৃষিজমিতে কাজ করছিলেন। এ সময় ইউনুস আচমকা ছুরি দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। ফরহাদকে কোপানোর পর রাস্তার পাশে থাকা আজগর আলী ও সেন্টু মিয়াকে কোপান ইউনুস। পরে আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করেন। তাদের প্রথমে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক এবং পরে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ফরহাদ মিয়া ও আলী আজগরকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ইউনুসকে আটক করে।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, ইউনুস খুবই চুপচাপ প্রকৃতির মানুষ। তিনি কারও সঙ্গে খুব একটা কথা বলেন না। কিছুদিন ধরে তিনি বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে মেডিকেল রিপোর্টে মস্তিষ্কে সমস্যা ধরা পড়ায় তিনি বিদেশে যেতে পারেননি। এ নিয়ে হতাশায় ভুগছিলেন ইউনুস।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মতিন বলেন, ‘অভিযুক্ত ইউনুস মাদকাসক্ত। প্রায়ই তিনি মানুষের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করে থাকেন। আজ তিনি হঠাৎ করেই পাঁচজনকে ছুরিকাঘাত করার পর দুইজন মারা গেছেন।’

নজরপুর ইউপি চেয়ারম্যান বাদল সরকার বলেন, ‘ইউনুস মানসিক ভারসাম্যহীন বলে শুনেছি। তার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার চৌধুরী বলেন, ‘মানসিক ভারসাম্যহীন ইউনুসকে আটকের পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই সঙ্গে নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর