বুধবার, ২১ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বিনিয়োগে ১০ বছর করমুক্ত সুবিধা চাই

আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী

বিনিয়োগে ১০ বছর করমুক্ত সুবিধা চাই

আসছে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বিনিয়োগের জন্য ১০ বছর মেয়াদি করমুক্ত সুবিধা চেয়েছেন শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ। তিনি বলেছেন, ‘নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি করমুক্ত সুবিধা চাই। একই সঙ্গে নতুন উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের ২ কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থের উৎস নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। পাশাপাশি এ বাজেটে করপোরেট কর হার কমপক্ষে ১০ শতাংশ কমানো উচিত।’

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ। তিনি সংগঠনটির বাজেট প্রস্তুতি তুলে ধরে বলেন,  মুজিব শতবর্ষের অন্যতম লক্ষ্য অনুযায়ী, সব তরুণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে হবে। স্বাবলম্বী তরুণ সমাজ গঠন করতে ‘তরুণ উদ্যোক্তা নীতি, একটি দক্ষ ও কর্মঠ যুবসমাজ’ তৈরি করতে প্রতি উপজেলায় যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করে স্বল্প ও অদক্ষ তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘বিসিআই মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতে তরুণ শিল্পোদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার জন্য ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এই ধারাবাহিকতায় মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্প এবং তরুণ শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য ন্যূনতম পাঁচ বছর কর অবকাশ প্রদান করার পর বিশেষ কর সুবিধা প্রদান করা হোক। কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পাঁচ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের শ্রমিক নিয়োগ করলে বিশেষ কর সুবিধা প্রদান করা হোক। ক্ষুদ্র শিল্প এবং নারী উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে খাতভিত্তিক যৌথ প্রতিষ্ঠানগুলোকে রপ্তানিভিত্তিক বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা প্রদান করা হোক। নতুন উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর কর অবকাশের প্রস্তাব করছি।’

বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারীর অর্থনৈতিক প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় বিনিয়োগ ও শিল্পায়নবান্ধব স্থায়ী কর ও শুল্ক ব্যবস্থা প্রবর্তন করা অপরিহার্য। সম্পূরক শুল্ক হার হ্রাস করে বিদ্যমান শিল্প প্রতিরক্ষণ হার কমানো সমীচীন হবে না। মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে পণ্য আমদানি বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নিয়মিতভাবে মূল্যের খাতভিত্তিক সঠিক ডাটা আহরণ, সে ভিত্তিতে কর আরোপ করা এবং সব বন্দরে স্ক্যানার ও স্বয়ংক্রিয় পরিমাপ যন্ত্র স্থাপনের প্রস্তাব করছি।’ তিনি ভ্যাট-সংক্রান্ত প্রস্তাবে বলেন, ভোক্তা ও দেশের ৮৫ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের স্বার্থ ও সামর্থ্য অনুযায়ী সব পণ্য ও সেবা খাতের জন্য প্রযোজ্য ভোক্তাবান্ধব, ব্যবসাবান্ধব এবং রাজস্ববান্ধব সুনির্দিষ্ট স্তরভিক্তিক ভ্যাট হার জাতীয় স্বার্থে অপরিহার্য।

আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ আয়কর-সংক্রান্ত প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করছি। ব্যক্তিগত করমুক্ত সীমা ও বিদ্যমান আয়করের হার পুনর্নির্ধারণ, মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় করমুক্ত সীমা পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব করছি। শিল্প খাত রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং আমদানি হ্রাসের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করে দেশের অর্থনীতিতে অধিক ভূমিকা রাখায় করপোরেট কর আরোপ করার প্রস্তাব করছি। সুষম আঞ্চলিক উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখার জন্য শুধু ঢাকা বা চট্টগ্রামকেন্দ্রিক না করে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত ও অনুন্নত অঞ্চলে বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন উৎসাহিত করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য বিশেষ রেয়াতি সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করছি।’

সর্বশেষ খবর