বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

পঞ্চগড়ে ফের দেখা মিলল রেড কোরাল কুকরি সাপ

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ে ফের দেখা মিলল রেড কোরাল কুকরি সাপ

পঞ্চগড়ে আবারও দেখা মিলল বাংলাদেশে একেবারে নতুন প্রজাতির সাপ ‘রেড কোরাল কুকরি’। এ নিয়ে বাংলাদেশে তৃতীয়বার দেখা গেল এই সাপ। তিনবারই তার দেখা মিলেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে।

মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার কামাত কাজল দিঘী ইউনিয়নের টুনিরহাট গ্রামে শহিদুজ্জামান শহিদের বাড়িতে সাপটিকে আটক করা হয়। বাড়ির পাশে থাকা বাঁশ বাগান থেকে রাত ৮টার সময় সাপটি বের হয়ে শহিদুজ্জামান শহিদের বাড়ির আঙ্গিনায় যায়। এসময় বাড়ির লোকজন সাপটিকে দেখতে পেয়ে চিৎকার করে। পরে স্থানীয় কয়েকজন ছেলে এসে দেখে সাপটিকে ‘রেড কোরাল কুকরি’ সাপ বলে চিহ্নিত করে। তারা কোনোমতে অক্ষত অবস্থায় সাপটিকে আটক করে শহিদের কাছে রাখে। খবর পেয়ে বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহ গতকাল দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়ে সাপটি তার দায়িত্বে নেয়। ফিরোজ আল সাবাহ বলেন, সাপটি দিনের বেলা সূর্যের আলোকে তেমনভাবে সহ্য করতে পারে না, যার কারণে রাতের আঁধারে মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যায় ঝলই শালশিরী এলাকায় উপযুক্ত পরিবেশে সাপটিকে অবমুক্ত করা হয়। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আব্দুল্লাহ সাদিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি বোদা উপজেলার ঝলইশালশিরি ইউনিয়নের কালিয়াগঞ্জ বাজারে প্রথম দেখা মেলে এই সাপের। দ্বিতীয় ‘রেড কোরাল কুকরি’টিকে মেরে ফেলা হয় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট টুনিরহাট এলাকায়। সর্বপ্রথম এই সাপের দেখা মেলে ১৯৩৬ সালে ভারতের উত্তরপ্রদেশের খেরি জেলায়। সেই নামানুসারেই জুওলোজিক্যাল নামকরণ করা হয়েছে ‘oligodon kheriensis।’ দীর্ঘ ৮২ বছর পর ২০১৯ সালে আবার উত্তর প্রদেশের খেরি জেলায় দেখা গিয়েছিল লাল প্রবাল সাপটি। এছাড়া নেপালের মহেন্দ্রনগর, চিতোয়ান ন্যাশনাল পার্ক, ভারতের নৈনিতাল, জলপাইগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে দেখা যায়। উজ্জল কমলা ও লাল প্রবাল রঙ্গের এই সাপটি অত্যন্ত মোহনীয়। লাল সাপটি মৃদু বিষধারী ও অত্যন্ত নিরীহ। এই সাপটি পৃথিবীর দুর্লভ সাপদের একটি। পৃথিবীতে হিমালয়ের পাদদেশ দক্ষিণে ৫৫ আর পূর্ব-পশ্চিমে ৭০ কিলোমিটার এলাকায় দেখা যায়। সাপটি নিশাচর এবং বেশিরভাগ সময় মাটির নিচেই থাকে। সম্ভবত মাটির নিচে কেঁচো ও লার্ভা পিঁপড়ার ডিম ও উইপোকার ডিম খেয়ে জীবন ধারণ করে। নরম মাটি পেলে মাটি খুঁড়ে ভিতরে চলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। মাটির ভিতরে থাকার জন্য রোসট্রাল স্কেল ব্যবহার করে সাপটি। রোসট্রাল স্কেল হলো সাপের মুখের সম্মুখ ভাগে অবস্থিত অঙ্গবিশেষ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর