শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

দৃষ্টিনন্দন বাবর আলী মসজিদ

মাসুদ হাসান বাদল, শেরপুর

দৃষ্টিনন্দন বাবর আলী মসজিদ

শেরপুর শহরের হাসপাতাল রোডে নারায়ণপুর বাগবাড়ী এলাকায় দৃষ্টিনন্দন বাবর আলী জামে মসজিদ। এ মসজিদের সম্পূর্ণ জমি ও নির্মাণের বেশির ভাগ অর্থের জোগান দিয়েছেন এ এলাকার শিল্পপতি সদ্যপ্রয়াত ইদ্রিস মিয়া। অর্থ দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে মুসলমানরা মসজিদটি দেখতে ও নামাজ পড়তে আসেন। নানা কারুকাজ, কাঠের আসবাবপত্র, দামি পাথর, টাইলস ও বর্ণিল আলোর ঝলকানিতে রাতের মসজিদটি হয়ে ওঠে আরও সুন্দর। খালি জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে দেশি-বিদেশি ফুল-ফলের বাগান। মসজিদের ছাদে বাগানের কাজ চলছে। ৪০ শতক জমির ওপর মসজিদটির নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ছিল এ রমজান মাসেই, কিন্তু ইদ্রিস মিয়া ১২ এপ্রিল মারা যাওয়ায় কাজ থেমে আছে। জানা গেছে, তিন বছর ধরে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সৌদি আরবের কোনো মসজিদের অনুকরণে বাবার নামে ‘বাবর আলী জামে মসজিদটি’ নির্মাণ করেন শিল্পপতি ইদ্রিস মিয়া। এ মসজিদে একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারবেন ২ হাজার মুসল্লি। পাশেই থাকছে পর্দাসংবলিত অন্তত ৩০০-৪০০ মহিলার নামাজ পড়ার ব্যবস্থা। নকশা অনুযায়ী মসজিদের ভিতরের কাজ অনেকটা শেষ হলেও বাইরের কাজ এখনো বাকি আছে। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে দামি আধুনিক টাইলস, পাথর, নকশা, রং ও আলো। সব মিলিয়ে এটি এখন আধুনিক এক স্থাপত্য বলে মনে করেন স্থানীয়রা। অন্তত ২ কোটি টাকার সেগুন কাঠ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দরজা ও খোদাই করা নকশাবিশিষ্ট বিশাল আলমিরা। লাগানো হয়েছে বর্ণিল বাতি। রং আর আলোয় মিলে রাতের মসজিদকে করে তোলে আরও আকর্ষণীয়। এশা ও ফজরের নামাজে নানা রঙের বাতি কিছুক্ষণ পরপর রং পরিবর্তন হয়ে বিশেষ এক আবহের সৃষ্টি করে। এ মসজিদের মুয়াজ্জিনের মায়াবী আজানের ধ্বনি ও ইমামের সুরা কিরাত এলাকার মুসলমানদের নামাজের প্রতি বিশেষ আগ্রহের সৃষ্টি করে বলে অনেকেই জানিয়েছেন। মুসল্লিদের সুবিধার্থে মসজিদটিতে থাকছে গরম ও ঠান্ডা অজুর পানি। শীততাপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র বসানোর কাজ চলছে। মসজিদের সামনে বসানো হবে বিশাল আকাুেরর ফোয়ারা। ইদ্রিস মিয়ার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মসজিদের পাশেই তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে স্বজনদের বলে গেছেন মসজিদটি যেন সব সময় উজ্জীবিত রাখা হয়। একটি অত্যাধুনিক মসজিদ নির্মাণ করা নিয়ে বাবার দেওয়া প্রতিশ্রুতি অবশ্যই রক্ষা করবেন বলে ইদ্রিস মিয়ার উত্তরসূরি (একমাত্র ছেলে) গোলজার মো. ইয়াহইয়া জিহান নিশ্চিত করেছেন। জিহান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘মসজিদের নির্মাণের সব পরিকল্পনা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে, এখানে টাকার কোনো হিসাব করা হবে না।’

সর্বশেষ খবর