শনিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বিনিয়োগ হয়নি, কমেছে কর্মসংস্থান, চাই প্রণোদনা

ফারুক হাসান

বিনিয়োগ হয়নি, কমেছে কর্মসংস্থান, চাই প্রণোদনা

করোনাভাইরাস সংকট উত্তরণে নতুন বাজারে পোশাক পণ্য রপ্তানিতে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ১০ শতাংশ হারে প্রণোদনা চেয়েছেন পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মো. ফারুক হাসান। তিনি বলেছেন, করোনাকালে গত এক বছরে কোনো বিনিয়োগ হয়নি। কর্মসংস্থানও কমে গেছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে কর সুবিধা দেওয়া হোক। উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ২৫ করা হোক।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ সভাপতি মো. ফারুক হাসান। তিনি বলেন, পোশাকশিল্পের ওপর করোনা মহামারীর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। জাতীয় অর্থনীতির সিংহভাগই পোশাকশিল্পের ওপর নির্ভর করে। সুতরাং এই শিল্পকে সক্রিয় রাখা জাতীয় দায়িত্ব। এই শিল্প একদিকে জাতীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখছে, অন্যদিকে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে প্রতিনিয়ত। সে ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখা খুব জরুরি। দেশের পোশাকশিল্পকে এগিয়ে নিতে বাজেটে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

দেশের অন্যতম পোশাক পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান জায়ান্ট গ্রুপের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, পোশাকশিল্পের বাজার সম্প্রসারণ, পণ্য বহুমুখীকরণ এবং উন্নত মানের পণ্য তৈরিতেও নজর দিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইথ প্রাইড’ এই স্লোগান নিয়ে পৃথিবীর প্রায় ১৬০টির বেশি দেশে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকাকে সমুজ্জ্বল রেখেছে আমাদের পোশাকশিল্প। করোনার কারণে পোশাকশিল্প মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিকূল পরিস্থিতি দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করে পোশাকশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হবে-এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ। এই বাজেটে পোশাকশিল্পে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। তারল্য সংকট মোকাবিলা করে কারখানাগুলোকে সচল রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

ফারুক হাসান বলেন, করোনা মোকাবিলা ও শিল্প পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় ১৮ মাস থেকে বাড়ানো ও কিস্তির আকার ছোট করা দরকার।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার জন্য বিশেষ সহায়তা তহবিলের আওতায় ৫০০ কোটি টাকার একটি বরাদ্দ বাজেটে থাকা উচিত। এই তহবিলের মাধ্যমে নতুন পণ্য ও বাজারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান ও ভার্চুয়াল বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি সংকটাপন্ন কারখানাগুলোর জন্য জরুরি তহবিল গঠনও প্রয়োজন। কারণ, যেসব কারখানা আর্থিক সমস্যা ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে, কিন্তু তাদের অতীতে ঋণ খেলাপির কোনো রেকর্ড নেই এসব কারখানা ঋণের কিস্তি পরিশোধে অসমর্থ বা খেলাপি হলে তাদের ব্যবসা থেকে প্রস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

বিজিএমইএ সভাপতি শ্রমিকদের পুষ্টিমান উন্নয়নে দৃষ্টি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে এই মুহুর্তে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তারপরও দ্রব্যমূল্য, আবাসন, চিকিৎসা খরচের ঊর্ধ্বগতি নিম্ন আয়ের মানুষের পরিমিত জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে একটি উদ্বেগের বিষয়। অর্থনীতি ও রপ্তানি আয় অর্জনে পোশাক শ্রমিকদের তুলনামূলক গুরুত্ব বিবেচনা করে তাদেরও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় আনা হোক। এ লক্ষ্যে বাজেটে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ চাই। পাশাপাশি শ্রমিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ১ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর