সোমবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ সুবিধা অব্যাহত রাখুন

আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল

অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ সুবিধা অব্যাহত রাখুন

আসছে ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে দেশের অর্থনীতির ইতিবাচক ধারা বজায় রাখতে আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল। তিনি বলেছেন, সরকার আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে ছাড় দেওয়ায় বড় অঙ্কের অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় ফিরে আসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে এই সুযোগ দেওয়ায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে। তাই করোনা সংকট কাটিয়ে উঠতে আগামী বাজেটেও রাজস্ব খাতে ছাড় দেওয়া প্রয়োজন। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল। তিনি বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেন, আবাসন খাতের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের জন্য গৃহায়ণ খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ ফ্ল্যাট, প্লট, বাণিজ্যিক ভবন ও বিপণিবিতানে বিনিয়োগের জন্য বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা বহাল রাখা প্রয়োজন। ফলে দেশের জাতীয় সম্পদ ও প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে। আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা ১৯বি অবিলম্বে পুনঃপ্রবর্তন করা না হলে, বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হওয়া বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন দেশে ‘সেকেন্ড হোম’ গ্রহণের সুযোগ থাকায় প্রচুর অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। ওইসব দেশে ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ের অর্থের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা হয় না।

তিনি বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ দেশে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেওয়ার ফলে ভবিষ্যতে ওই সব বিনিয়োগকারী করজালের আওতায় চলে আসবেন। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। কিন্তু আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা ১৯বি-তে ইনডেমিনিটি বা দায়মুক্তি থাকার কারণে দেশের রাজস্ব আয় বাড়বে। রাজস্ব বৃদ্ধির এই স্রোত ধরে রাখা জরুরি। তারমতে, সরকার আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে ছাড় দেওয়ায় বড় অঙ্কের অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় ফিরে আসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। চলতি বছর এ সুযোগ দেওয়ায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে। তাই এদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ধারা বজায় রাখতে আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখা এখন সময়ের দাবি। রিহ্যাব সভাপতি বলেন, নিবন্ধন অধিদফতরের হিসাবে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা নিবন্ধন খাতে ৭ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এর আগের কয়েক বছর এ আয়ের পরিমাণ ছিল প্রতি বছর ১১ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা। করোনাকালের সংকটে ফ্ল্যাট ও প্লট বিক্রি কমে যাওয়ায় নিবন্ধন খাতে আয় কমেছে। নিবন্ধন ছাড়াও আবাসন খাত থেকে ভ্যাট ও অন্যান্য কর বাবদ সরকারের আয় কয়েক হাজার কোটি টাকা। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে আগামী বাজেটে রাজস্ব খাতে ছাড় দেওয়া প্রয়োজন।  আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল বলেন, করোনা সংক্রমণের আঘাতে আবাসন শিল্পসহ সবখাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে আরও বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। তারপরও অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখছে দেশের আবাসন খাত। এটা বিবেচনায় নিয়ে আগামী বাজেটে আবাসন খাতে গুচ্ছ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর