সোমবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

ফেরিঘাটে উপচে পড়া ভিড়

মানুষ ছুটে আসছে ঢাকায়

প্রতিদিন ডেস্ক

ফেরিঘাটে উপচে পড়া ভিড়

মাদারীপুরের বাংলাবাজারে গতকাল ফেরিতে উপচে পড়া ভিড় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

মার্কেট শপিং মল ব্যবসা-বাণিজ্য খুলেছে এবং লকডাউন শিথিল হচ্ছে- এমন খবরে দ্বিতীয় দিনের মতো গতকালও উপচে পড়া ভিড় হয়েছে ফেরিঘাটগুলোতে। বিভিন্ন ঘাট পেরিয়ে দলে দলে মানুষ ছুটেছেন রাজধানী ঢাকার দিকে। ফলে এদিনও বাংলাবাজার-শিমুলিয়া, দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাট দিয়ে পার হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো বিবরণ-

মাদারীপুর : দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার খ্যাত বাংলাবাজার-শিমুলিয়া  নৌরুটে ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় ছিল গতকাল ভোর থেকেই। এর আগে গত শুক্রবার থেকেই রাজধানীতে যাওয়ার ভিড় বাড়তে থাকে বাংলাবাজার ঘাটে। গত শনিবার ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল মার্কেট খোলার খবরে এদিন সকাল থেকেই হাজার হাজার যাত্রীর ঢাকামুখী ভিড় ছিল। গতকাল সকাল থেকেও ঢাকাগামী যাত্রীদের একই রকম চাপ দেখা গেছে। বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ফেরিঘাট সূত্র জানিয়েছে, এই নৌরুটে মূলত ১৬টি ফেরি সচল রয়েছে। তবে পরিবহন নেই। শিমুলিয়া  থেকে কয়েকদিন ধরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পণ্যবাহী পরিবহন পার হয়নি। ছোট ছোট গাড়ি সীমিত আকারে পার হয়েছে। গাড়ি কম থাকায় বড় ফেরিগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। ছোট ফেরি দিয়ে জরুরি গাড়ি পার করা হচ্ছে। তবে বাংলাবাজার থেকে যাত্রী ও ছোট গাড়ি পার হয়ে শিমুলিয়া আসছিল। ফলে গতকাল সকাল থেকেই ঢাকাগামী যাত্রীর চাপ তৈরি হয়। ঘাটের একটি সূত্র জানায়, স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালী মহল স্পিডবোট চালু রাখে। অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে এগুলো যাত্রী পার করছে।

এদিকে গতকাল ফেরিতে ওঠা নিয়ে যাত্রীদের মাঝে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। এতে চারজন আহত হয়েছেন। একটি সূত্র জানায়, যারা স্পিডবোট কিংবা ট্রলারে ওঠার সুযোগ পাননি, তারা ফেরিতে উঠতে প্রতিযোগিতায় নামেন। ফেরিতে আগে ওঠা নিয়ে যাত্রীদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। দুপুরের দিকে কয়েকজন যাত্রী  ফেরিতে ওঠা নিয়ে মারামারি শুরু করেন। পরে খবর পেয়ে ঘাটের দায়িত্বরত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাজবাড়ী : গতকাল যাত্রী ও যানবাহনের প্রচন্ড চাপ ছিল রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। সামাজিক দূরত্ব না মেনে গাদাগাদি করে পারের কারণে ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হয়েছে।  সকালে ঢাকামুখী যাত্রী ও জরুরি পণ্যবাহী পরিবহনের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। যাত্রী ও যানাবাহন পারাপারের জন্য বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিসি) ৬টি ছোট ফেরি চালু রেখেছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে। মাগুরা থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে আসা যাত্রী মো. আসিবুর রহমান বলেন, জরুরি প্রয়োজনে ঢাকায় যেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, মাগুরা থেকে মোটরসাইকেলে এই ঘাট পর্যন্ত আসতে হয়েছে। যেখানে আমার ১ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে। গ্রামের রাস্তা দিয়ে তারা আমাকে ঘাটে পৌঁছে দিয়েছে। এক প্রকার বাধ্য হয়েই ঢাকায় যাচ্ছি।

শরিফুর রহমান নামে একজন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দেশের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট। এই নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ যাত্রী ও যানবাহন পারাপার হয়ে থাকেন। লকডাউনের কারণে এই রুটে ৬টি ছোট ফেরি চলাচল করছে। যেগুলো অপ্রতুল, যে কারণে সবাই জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়েই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উপেক্ষা করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষ যাচ্ছেন।

মানিকগঞ্জ : শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেওয়ার খবরে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড় দেখা গেছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে। গতকাল পদ্মা নদী পার হয়ে পাটুরিয়া ঘাটে ভিড় করেন তারা। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় যাত্রীরা পড়েন বিপাকে। তখন তারা কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, ভ্যান, রিকশাসহ বিভিন্ন বাহনে ঢাকা যেতে বাধ্য হয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর