বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

ডিজিটাল লেনদেন ভ্যাটমুক্ত চাই

সৈয়দ আলমাস কবির

ডিজিটাল লেনদেন ভ্যাটমুক্ত চাই

২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সব ধরনের ডিজিটাল লেনদেনে ভ্যাটমুক্ত সুবিধা চান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির। তিনি বলেছেন, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) প্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট কর মওকুফ করতে হবে। এতে ইন্টারনেটের প্রসার হবে। ফলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে। একই সঙ্গে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যে কর অবকাশ সুবিধা রয়েছে তার মেয়াদ বাড়িয়ে ২০৩০ সাল পর্যন্ত করতে হবে। ফলে বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও সুবার্তা যাবে। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনেক বিনিয়োগ আসছে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির। তিনি আগামী বাজেটে সংগঠনটির প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা যেহেতু কর অব্যাহতি সুবিধা পায় তাই আগামী জুলাই থেকে তিন বছর মেয়াদি ডিজিটাল কর অব্যাহতির সনদ ইস্যু করা হোক। এতে ব্যবসা সহজতর হবে। বর্তমানে অনেক সময় দীর্ঘদিন কর অব্যাহতির সনদ পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালা মোতাবেক এ খাতে কর অব্যাহতির সুবিধা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বহাল রাখা হোক। কারণ উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীরা এখনো ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। করোনা মহামারীতে ব্যবসায়ীরা কয়েক বছর পিছিয়ে পড়েছেন। এর সঙ্গে বর্তমানে কর অব্যাহতির মেয়াদ তিন বছর হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন না। তিনি বলেন, ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীদের করপোরেট কর বর্তমানে ৩৫ শতাংশ রয়েছে, এটা ১০ শতাংশ কমানো প্রয়োজন। বর্তমানে বড় অঙ্কের করপোরেট কর এ খাতের উন্নয়ন ও ব্যবসার প্রসারে বড় বোঝা হিসেবে কাজ করছে। স্থানীয় সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবার ওপর আরোপিত উৎসে ভ্যাট এবং উৎসে কর সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হোক। এতে স্থানীয় সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বিকাশ হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়বে। আবার সফটওয়্যার কেনা বাবদ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রারও সাশ্রয় হবে। বেসিস সভাপতি বলেন, সব ধরনের ডিজিটাল লেনদেন উৎসাহিত করতে প্রণোদনা দেওয়া হোক। যেসব কোম্পানি অনলাইনে লেনদেন সুবিধা নেবে তাদের ভ্যাট ও অগ্রিম আয়কর বা এআইটি সুবিধা দেওয়া হোক। এতে অনলাইনে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ভ্যাট ও কর পরিশোধ হয়েছে কি না তাও মনিটরিং করা সম্ভব। পাশাপাশি রাজস্ব বাড়বে। তাই প্রাথমিকভাবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অনলাইনে লেনদেনের জন্য উৎসাহিত করতে কমপক্ষে আগামী তিন বছর প্রণোদনা দেওয়া হোক। সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, সাইবার সিকিউরিটিজ পণ্যের জন্য আলাদা কোনো হারমোনাইজড সিস্টেম বা এইচএস কোড না থাকায় উচ্চ হারে শুল্ক প্রদান করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আসছে বাজেটে এইচএস নির্ধারণ করে ডাটাবেজ, অপারেটিং সিস্টেম, প্রোডাকটিভিটি টুলের জন্য প্রযোজ্য শুল্ক করহার নির্ধারণ করতে হবে। কারণ সাইবার সিকিউরিটি এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্বেরই সমস্যা। সাইবার সিকিউরিটির অভাবেই বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ চুরির মতো ঘটনা ঘটেছে। আর সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সাইবার পণ্যের ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্ককর কমাতে হবে। এটা এখন বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে। আবার শুল্ক ফাঁকি দিতে অবৈধভাবে অর্থ পরিশোধ করে সাইবার পণ্য আনা হচ্ছে। এতে সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। ফলে বৈধ পথে যারা সাইবার নিরাপত্তা পণ্যসামগ্রী আমদানি করছেন তাদের আর্থিক ক্ষতি বাড়ছে। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে ৩০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা উচিত। এ তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের ২ শতাংশ সুদে নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদান করতে হবে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির পাশাপাশি আইটি খাতের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর