বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

চরমপন্থা ঠেকাতে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

ইএফএসএএস

প্রতিদিন ডেস্ক

বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও ধর্মীয় চরমপন্থা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের কার্যক্রমের প্রশংসা করেছে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় অলাভজনক সংস্থা ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ (ইএফএসএএস)। সংস্থাটি বলেছে, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিবেশী পাকিস্তান যেখানে ‘চরমপন্থি ও সন্ত্রাসীদের উৎসাহ, আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে’ সেখানে এদের দমনে বাংলাদেশের ভূমিকা যথেষ্ট ইতিবাচক। সূত্র : রয়টার্স।

‘বাংলাদেশ অ্যান্ড পাকিস্তান : অ্যাকটিং এগেইনস্ট এক্সট্রেমিজম ভারসাস মেকিং এ শো অব অ্যাকটিং এগেইনস্ট এক্সট্রেমিজম’ শিরোনামে এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। নিজ নিজ দেশের সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সহিংস ও প্রাণঘাতী বিক্ষোভে জড়িয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায়     পরিচালিত সহিংস বিক্ষোভের পর সরকার হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার অভিযান চালায়। এই প্রেক্ষাপটে সরকারের ক্ষোভ কমাতে হেফাজত তাদের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে। অথচ পাকিস্তানে টিএলপি সেদেশ থেকে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়ে পার্লামেন্টে বিতর্ক করতে তাদের সরকারকে বাধ্য করেছে। ফ্রান্সে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ক্যারিকেচার প্রচারের পর স¤প্রতি ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের দাবিতে রাজপথে নামে টিএলপি।

গভীর বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তৈরি মন্তব্য প্রতিবেদনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বীকৃতই এফএসএএস বলছে, ‘এটা প্রমাণিত যে, যেখানে শেখ হাসিনার সরকার কট্টরপন্থি ইসলামী গোষ্ঠী হেফাজতকে মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে, সেখানে পাকিস্তান এ ব্যাপারে নাটকীয় সংকটে পড়ে ধারাবাহিকতা রাখতে পারেনি এবং টিএলপির মতো গোষ্ঠীকে মোকাবিলায় দুর্বল বিবেচনা ও দুর্বল পদক্ষেপ বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছে।’

ইএফএসএএসের মন্তব্য প্রতিবেদনে সন্ত্রাস ও চরমপন্থা মোকাবিলায় এ অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ দুই মুসলিম দেশের গৃহীত দৃষ্টিভঙ্গী ও নীতির স্পষ্ট পার্থক্যের বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের এই ৫০ বছরে এমন সময়ও গেছে যখন এই দেশে সন্ত্রাস ও চরমপন্থাকে আশ্রয়, প্রশ্রয় ও উৎসাহ জোগানো হয়েছে। এটা বিশেষভাবে সত্য যখন অতীতে পাকিস্তানের প্রভাব অনেকটাই এর চালিকাশক্তি ছিল। তবে গত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশে একটি বিস্তৃত ও ধারাবাহিক সন্ত্রাসবিরোধী শক্তি ক্ষমতায় আছে। অন্যদিকে পাকিস্তান ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছে এবং বিভিন্ন বর্ণের চরমপন্থি ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখে চলার ব্যাপারে তাদের লক্ষ্যে অবিচল থেকেছে। গত সপ্তাহের ঘটনাবলি দুই দেশের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে যে বিশাল পার্থক্য আছে তা স্পষ্ট করেছে এবং সভ্য দেশগুলোর এসব ঘটনাবলিকে সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানের ক্ষেত্রে একটি বার্তা হিসেবে গ্রহণ করা এবং পাকিস্তানের ওপর চাপ শিথিল না করার বিষয়ে অবস্থান ধরে রাখা দরকার।’ ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তরিকভাবেই সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে অবস্থান ধরে রাখতে চায় এবং সেকারণে এখন পর্যন্ত এ ধরনের বেশিরভাগ পদক্ষেপেই তারা সফল। অথচ এর বিপরীত অবস্থানে পাকিস্তান এসব বিষয়ে সমসময়ই লুকোচুরির আশ্রয় নিয়েছে। তারা বরং বেশি আগ্রহী বিশ্বকে এমন একটি ধারণা দিতে যে তারা সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে, অথচ তারা আসলে অতীতের পথই ধরে রেখেছে এবং সন্ত্রাস ও চরমপন্থা টিকিয়ে রাখার কিছু বিপজ্জনক নীতি ধরে রেখেছে। নির্ভয়ে সন্ত্রাস ও চরমপন্থা মোকাবিলায় পাকিস্তানের একই সঙ্গে নৈতিক দৃঢ়তা ও কর্তৃত্বের ঘাটতি রয়েছে। অন্যদিকে এই উদ্দেশ্য সাধনে শেখ হাসিনার আন্তরিকতা তাকে শক্তিশালী করেছে এসবের বিরুদ্ধে সফল পদক্ষেপ গ্রহণে।’

সর্বশেষ খবর