শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

হাইব্রিড-বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে শুল্ক কমান

হাবিব-উল্লাহ ডন

হাইব্রিড-বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে শুল্ক কমান

২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে পরিবেশবান্ধব হাইব্রিড ও বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছেন বারভিডার সাবেক সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন। তিনি বলেছেন, দেশে নতুন গাড়ি আমদানিতে বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ফলে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজারে তৈরি হয়েছে অসম প্রতিযোগিতা। পুরনো গাড়ি আমদানি ব্যাপক কমেছে। লোকসানের মুখে বহু ব্যবসায়ী ক্রমাগত তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সাবেক সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন। তিনি বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, এবারের বাজেটে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের টিকে থাকার জন্য কিছু সুবিধা খুবই প্রয়োজন। বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি বাড়াতে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ প্রত্যাহার করতে হবে। এই গাড়ির ব্যবহার বাড়লে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তিনি করোনাকালে গাড়ি ব্যবসায়ীদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে বলেন, এবারের বাজেটে যদি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের দিকে সুনজর দেওয়া না হয়, তাহলে দেশের মোটরগাড়ির অন্যতম জোগানদাতা এ খাতটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমদানি হওয়া নতুন ও পুরনো গাড়ির ব্যবসায় ভারসাম্য আনতে ইয়েলো বুকে উল্লিখিত গড় মূল্য থেকে ডিলার কমিশন বাবদ ২০ শতাংশ বাদ দেওয়া হোক। পুরনো গাড়ির মূল্যের ওপর অবচয়ের হারেও পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ বর্তমানে যে হারে অবচয় প্রদান করে শুল্কমূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে, তা ন্যায় সংগত নয়। বারভিডার সাবেক এই সভাপতি বলেন, উৎপাদনের পরবর্তী বছর আমদানি হলে গাড়ির মূল্যের ওপর ১০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছর ২০ শতাংশ, তৃতীয় বছর ৩০ শতাংশ, চতুর্থ বছর ৪০ শতাংশ ও পঞ্চম বছর ৪৫ শতাংশ হারে অবচয় নির্ধারণ করা হোক। আর অবচয় সুবিধার জন্য বয়স গণনার ক্ষেত্রে চেসিস বুকে উল্লিখিত গাড়ি উৎপাদনের পরবর্তী বছরের প্রথম দিন থেকে শুরু করা উচিত। রিকন্ডিশন্ড হাইব্রিড গাড়ির ক্ষেত্রে সিসিভেদে সম্পূরক শুল্কের পুনর্বিন্যাস করতে হবে। একই সঙ্গে ১ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত ২০ শতাংশ, ২০০১ থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত ৪৫ শতাংশ, ২৫০১ থেকে ৩৫০০ সিসি পর্যন্ত ৬০ শতাংশ, ৩৫০১ থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত ১০০ শতাংশ, ৪০০০ সিসির ঊর্ধ্বে ১৫০ শতাংশ এবং ১৮০০ থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণ করতে হবে। ফসিল ফুয়েলে চালিত গাড়ির ক্ষেত্রে ১৬০০ সিসি পর্যন্ত ৩০ শতাংশ, ১৬০১ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত ৬০ শতাংশ, ২০০১ থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত ১০০ শতাংশ, ৩০০১ থেকে ৪০০০ সিসি পর্যন্ত ১৫০ শতাংশ, ৪০০০ সিসির ঊর্ধ্বে ২০০ শতাংশ এবং মাইক্রোবাসে ২০০০ সিসি পর্যন্ত ২০ শতাংশ ও ২০০১ সিসির ঊর্ধ্বে ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের দাবি করছি। হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, জাপানি বাস আমদানির পথ সুগম করতে শুল্ক ১ শতাংশে নামিয়ে আনা দরকার। শুল্ক ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনলে সাশ্রয়ী মূল্যে অত্যাধুনিক জাপানি বাস আমদানির পথ সুগম হবে। ফলে দেশে কার্যকর গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। এ ছাড়া ডাম্প ট্রাক, ফায়ার ফাইটিং ভেহিকলস, মিকশ্চার লরি, ক্রেন লরি ইত্যাদি আমদানিতেও শুল্কহার ১ শতাংশ করা উচিত। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পে এসব মোটরযানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সরকার শুল্ক সুবিধা দিলে এসব গাড়ি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

সর্বশেষ খবর