২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সোনার আমদানি শুল্ক কমানো ও ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। তিনি বাজেটে স্বর্ণশিল্পের জন্য বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে বলেছেন, বর্তমানে স্বর্ণ নীতিমালায় আমদানিতে প্রতি ভরিতে ২ হাজার টাকা শুল্ক দিতে হয়। আসছে বাজেটে এই শুল্ককর ১ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি করছি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) এই সহসভাপতি বলেন, স্বর্ণশিল্পের জন্য ভ্যাট ৫ শতাংশের পরিবর্তে কমিয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ করা হোক। আমদানি জটিলতা নিরসন ও অর্থ সাশ্রয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত বা রক্ষিত, মীমাংসিত সোনা নিলামের মাধ্যমে প্রকৃত সোনা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা এবং ২০ বছর এ খাতে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করার পদক্ষেপ আগামী বাজেটে চাই। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের স্বর্ণ নীতিমালায় ব্যবসায়ীরা আমদানিতে খুব একটা আগ্রহী হননি। এখন পর্যন্ত মাত্র ২৫ কেজি সোনা আমদানি হয়েছে। কিন্তু দেশে গ্রাহক পর্যায়ে বিক্রিতে ৫ শতাংশ ভ্যাট ব্যবসাবান্ধব নয়। দেশে বর্তমানে ৪ কোটি গ্রাহক রয়েছেন, যাদের ৭৫ শতাংশ দেশ থেকে কেনেন। আর বাকিরা বিদেশ থেকে সোনার অলঙ্কার কিনে থাকেন। বর্তমান করহার বজায় থাকলে ১০ বছর পর বিদেশনির্ভরতা ৪০ শতাংশে পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এ খাতে ৩০ লাখ শ্রমিক ও ২০ হাজার ব্যবসায়ী নিয়োজিত। বাজুস সাধারণ সম্পাদক বলেন, মূল্য নির্ধারিত পণ্যে সরকার ভ্যাট যুক্ত করে দিচ্ছে। উচ্চ মূল্যের এ পণ্যে ক্রেতারা ভ্যাট আলাদা দিতে চান না। এ কারণে ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে দেড় শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। তার মতে, পণ্যে মজুরি আলাদা হতে পারে। মজুরি ন্যূনতম ২০০ টাকা ধরে এর সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত করে মূল্য নির্ধারণের চেষ্টা করব। কোনো গয়নায় মজুরি ৫০০ বা ১ হাজার টাকা নিলে সে ক্ষেত্রে বাড়তি ভ্যাট ক্রেতার কাছ থেকে নিয়ে সরকারকে দিতে হবে। দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ভ্যাট ও মজুরিসহ সোনার গয়নার দাম নির্ধারণের পরিকল্পনা অনেক দিন ধরে বলে আসছি। যদিও ভ্যাট আদায়ে স্বচ্ছতা আনতে রাজধানীর বিভিন্ন জুয়েলার্সের শো-রুমে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন বসিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে সারা দেশের ব্যবসায় সামঞ্জস্য হয়নি। বড় ব্যবসায়ীদের ভ্যাট পুরোপুরি দিতে হয়। আর ইএফডির বাইরে থাকা ব্যবসায়ীরা কম পরিশোধ করেন। এ ক্ষেত্রে সবার জন্য সমান ভ্যাট আরোপের চিন্তা থেকে সোনার গয়নায় ভ্যাট ও মজুরি যুক্ত করে দাম নির্ধারণের চেষ্টা চলছে।