বুধবার, ৫ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

লকডাউনেও শহরে যানজট

নিজস্ব প্রতিবেদক

লকডাউনেও শহরে যানজট

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে ‘লকডাউন’ চললেও ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে যানজট দেখা গেছে। রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য মহানগর ও শহরে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও দেদার চলছে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি, অটোরিকশা ও রিকশা। করোনা মহামারী তোয়াক্কা না করে মানুষ ঈদের কেনাকাটা করতে ভিড় করছেন রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে। রাস্তায়ও মানুষের চলাফেরা বাড়ছে। বিভিন্ন বাজার, অলিগলি সর্বত্রই মানুষের ভিড়। কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। শুধু মহানগর নয়, আন্তঃজেলা সড়কগুলোতেও মানুষের চলাচল বেড়েছে। ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত অনেকেই। এছাড়া গতকাল ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ির আধিক্য ছিল। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট দেখা যায়। দফায় দফায় বাড়ানো লকডাউনের ভিতরে গতকালও ঢাকায় ছিল চিরচেনা যানজট। যানজটের মাত্রা রবিবার থেকেই বাড়ছিল। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাই তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে। রয়েছে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, পণ্যবাহী পিকআপ ভ্যানের আধিক্য।

এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে আগামীকাল থেকে ঢাকাসহ জেলার মধ্যে চলবে গণপরিবহন। কিন্তু সংক্রমণের ভয়াবহতা ঠেকাতে মানুষের দূরযাতায়াত বন্ধই থাকবে। এ জন্য আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। একইভাবে বন্ধ থাকবে ট্রেন ও লঞ্চ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা হয়েছে সব ধরনের শিল্প-কারখানা। বিশেষ করে তৈরি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় ঈদুল ফিতরের ছুটি তিন দিনের বেশি না দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দেখা গেছে, কয়েক দিন থেকেই ইফতারের আগে ঘণ্টাখানেক সময় বিভিন্ন এলাকায় যানজট লেগেই থাকছে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, তেজগাঁও, বাড্ডার সিগন্যালগুলোতে গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। পুলিশ বলছে, নানা অজুহাতে এখন মানুষ বের হওয়া শুরু করেছে। এর মধ্যে ওষুধ কেনার অজুহাতই বেশি। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে নীলক্ষেত এলাকায় ভয়াবহ যানজট ছিল। কিছুক্ষণ যানবাহন একেবারেই থেমে থেকেছে। আবার কিছুক্ষণ পর পিঁপড়ার গতিতে সামনে এগোচ্ছে। যানজটের এমন অবস্থা দেখে কেউ কেউ বিকল্প পথে যাওয়ার জন্য যানবাহন ঘুরিয়ে উল্টোপথে যাচ্ছে, আবার কেউবা নিরুপায় হয়ে যানজট ছাড়ার অপেক্ষায় থাকছে। শুধু নীলক্ষেত বা পলাশী মোড়ই নয়, ইফতারের ঘণ্টাখানেক আগে থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে পুরান ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। কয়েক দিন ধরে ইফতারপূর্ব ঘণ্টাখানেক সময় বিভিন্ন এলাকায় যানজটের খবর পাওয়া গেছে। কারণ খুঁজে জানা গেছে, এ সময় একই সঙ্গে বিভিন্ন এলাকা থেকে ঈদ শপিং করতে আসা মানুষ বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য রওনা হওয়ার কারণে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। ভাগ্য ভালো হলে কখনো মাগরিবের আজানের আগে বাসায় পৌঁছাতে পারেন, আবার কখনো কাউকে যানজটের কারণে রাস্তায় বসেই ইফতার করতে হয়। গতকাল কর্তব্যরত বেশ কয়েকজন ট্রাফিক কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েক দিন বিকালে যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয়। ঈদ শপিং করতে আসা অনেকেই একসঙ্গে বাসায় ফেরার জন্য রওনা হওয়ায়ই     এমন যানজট হয়। ইফতারের ১৫ মিনিট আগে যানজট একেবারে কমে যায়। অন্যদিকে গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ বাসস্ট্যান্ডে শত শত মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত রিকশা ছিল চোখে পড়ার মতো। একই চিত্র দেখা গেছে, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, সায়েন্স ল্যাব, নিউমার্কেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, মগবাজার, গুলশান, রামপুরা, বাড্ডা, নতুন বাজার, প্রগতি সরণি এলাকায়। প্রগতি সরণিতে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত সড়কে দীর্ঘ যানজট লক্ষ্য করা গেছে। শনিরআখড়া, যাত্রাবাড়ী, ধোলাইরপাড়সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপও দেখা গেছে। মানুষ সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশায় যাতায়াত করছেন। যাত্রাবাড়ীর মূল সড়কে যানজট দেখা গেছে। সড়কজুড়েই রিকশা আর সিএনজির আধিপত্য লক্ষ্য করা গেছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর