বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বাজেটের ১০% বরাদ্দ ও সংস্কার চাই

অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব

বাজেটের ১০% বরাদ্দ ও সংস্কার চাই

আসছে ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের মোট ১০ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ চান দেশবরেণ্য চিকিৎসাবিদ অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব। চিকিৎসক সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএর সাবেক এই সভাপতি বলেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সত্যিকারের উন্নতি চাইলে সবার আগে সংস্কার প্রয়োজন। বিদেশি প্রেসক্রিপশন ছাড়া স্বাস্থ্য খাতে সংস্কার না করতে পারলে বাজেট দিয়ে খুব একটা লাভ হবে না।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে বিএমএর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেছেন, মহামারী করোনাভাইরাসে সবার কাছে পরিষ্কার হয়েছে, আমাদের স্বাস্থ্য খাতের সামগ্রিক চিত্র। এমন নাজুক পরিস্থিতিতে গ্রাম থেকে শহরে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে একটি মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। এ ছাড়া টাকার অঙ্ক বাড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নতি হবে বলে আমি মনে করি না। তিনি বলেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা রয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যবস্থায়ও সংস্কারের দিকনির্দেশনা বাজেটে চাই। আবার এই সংস্কার হতে হবে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ ও প্রভাবমুক্ত। শিক্ষা খাতের বাণিজ্যকীকরণের কুফল এখন স্বাস্থ্য খাতেও পড়েছে।

বিএমএর সাবেক এই সভাপতি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির ৩ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দিয়ে থাকে। সেখানে বাংলাদেশ দিচ্ছে মাত্র ১ শতাংশ। প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশের বাস্তবতায় মোট বাজেটের ১০ শতাংশ বরাদ্দ স্বাস্থ্য খাতে চাই। তবেই জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী স্বাস্থ্য খাতের উন্নতি ঘটানো সম্ভব। অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুবের মতে, স্বাস্থ্যসেবার বিকেন্দ্রীকরণের দাবি বেশ পুরনো। এটি করা হলে চিকিৎসার জন্য গ্রামের মানুষকে ঢাকায় আসতে হতো না। প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা থাকা প্রয়োজন। তাহলে মানুষের ভোগান্তি কমবে। একই সঙ্গে পৃথকভাবে বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি না করে টারশিয়ারি হাসপাতালে সব বিভাগ শক্তিশালী করে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি উদাহরণ তুলে ধরে আরও বলেন, একজন রোগীর কিডনি, হার্ট, লিভার ও ডায়াবেটিস সমস্যা রয়েছে। এখন এই রোগী কোন বিশেষায়িত হাসপাতালে আগে যাবেন? কারণ এই বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর একটিতেও তিনি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা পাবেন না। এ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠানে এ সংক্রান্ত সব বিভাগ শক্তিশালীভাবে থাকলে সেখান থেকেই এই রোগীর পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হতো। জেলা পর্যন্ত এ ধরনের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা পদ্ধতি থাকা প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর