বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

দারুণ চঞ্চল পাখি কালাগলা টুনটুনি

আলম শাইন

দারুণ চঞ্চল পাখি কালাগলা টুনটুনি

কালাগলা টুনটুনি বিরল দর্র্শন আবাসিক পাখি। পরিচিত প্রজাতির ‘টুনটুনি’ পাখির মতো যত্রতত্র এদের দেখা মেলে না। কেবলমাত্র দেখা মেলে মিশ্র চিরসবুজ বনে। বাংলাদেশ ছাড়াও বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, মিয়ানমার, চীন, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, ব্রুনাই, লাওস, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড পর্যন্ত।

মায়াবী চেহারা। স্বভাবে ভারি চঞ্চল। স্থিরতা নেই খুব একটা। যেন একদন্ড বসার সুযোগ নেই কোথাও। এই আছে তো এই নেই। তবে যেখানেই থাকুক না কেন এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকতে পছন্দ করে। জোড়ের পাখিটি সামান্য দূরে থাকলেও ডাকাডাকি করে ভাবের আদান-প্রদান চালিয়ে নেয়। সারা দিন নেচে-গেয়ে সময় কাটায়। লেজ উঁচিয়ে নাচে। গান গায় ‘টিন-টিন-টিন-টিন বা কিট-কিট-কিট-কিট-’ সুরে। প্রজনন মৌসুমে পুরুষ পাখি নানা কসরত করে স্ত্রী পাখির মন ভোলাতে। বাসা বাঁধে মাটির কাছাকাছি ডালে। বেশ পরিপাটি বাসা। দুটি পাতাকে একত্রিত করে ঠোঁট দিয়ে সেলাই করে বাসা বাঁধে। অনেকটা দর্জির কাপড় সেলাই করার মতো। ইংরেজি নামকরণেও সেই রকমটি ইঙ্গিত পাওয়া যায়। পাখির বাংলা নাম- ‘কালাগলা টুনটুনি’। ইংরেজী নাম- ডার্ক নেকেড ট্রেইলরবার্ড (Dark-necked Tailorbird)। বৈজ্ঞানিক নাম- Orthotomus atrogularis ।

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য লম্বায় ১২-১৩ সেন্টিমিটার। মাথা পাটকিলে। ঘাড়ের দুই পাশ গাঢ় ধূসর। পিঠ থেকে লেজ পর্যন্ত জলপাই-সবুজ। ডানার বাঁকানো অংশ হলুদ। গলা কালোর ওপর সাদা ছিট ছিট। বুকে কালচে রেখা। পেটে ধূসর আভার সঙ্গে সাদা মিশ্রণ। ঠোঁট দুই পাটি ভিন্ন রঙের। ওপরের অংশ গাঢ় বাদামি হলেও কিনারটা ত্বক রঙের। নিচের অংশও ত্বক রঙের। চোখ বাদামি-কালো। স্ত্রী পাখির বর্ণে সামান্য তফাৎ রয়েছে। ওদের বুকে কালো রেখার উপস্থিতি নেই।

এদের প্রধান খাবার পোকামাকড় বা কীটপতঙ্গ। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর। বাসা বাঁধে মাটির কাছাকাছি গাছের পাতা দুটিকে সেলাই করে। সেলাই করা বাসার ভিতর নরম তন্তু বা তুলা দিয়ে পরিপাটি করে ৩-৪টি ডিম পাড়ে। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৫ দিন।

সর্বশেষ খবর