রবিবার, ৯ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

নিয়োগ পাওয়া ১৩৭ জনের যোগদান স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মেয়াদের শেষ দিন দেওয়া ১৩৭ জনের নিয়োগকে ‘মানবিক নিয়োগ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান। গতকাল বিকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠন করা তদন্ত কমিটির কাছে নিজের জবানবন্দি দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।

এদিকে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ১৩৭ জনের যোগদান স্থগিত করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করায় নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগদান কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৫ মে রাবিতে দেওয়া অ্যাডহক নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ জন্য তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ওই নিয়োগপত্রের যোগদান এবং তৎসংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হলো। রাবির বিদায়ী উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের মেয়াদ শেষ হয় ৬ মে। আগের দিন তিনি অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৩৭ জনকে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে যান। যদিও প্রথম দিন ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়েছিলেন বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে ৬ মে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ নিয়োগকে অবৈধও বলেছে মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির আহ্‌বায়ক করা হয়েছে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে। সদস্য সচিব হলেন ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব ড. মো. জাকির হোসেন আখন্দ। গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে কমিটির সদস্যরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। প্রথমে তারা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য (রুটিন দায়িত্বে) অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহার দফতরে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তদন্ত কমিটির ডাকে উপাচার্যের দফতরে যান সদ্য বিদায়ী উপাচার্য আবদুস সোবহান। তদন্ত কমিটি তার সাক্ষাৎকার নেন। বিকাল ৪টার দিকে তিনি ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এ সময় আবদুস সোবহান বলেন, ‘এই নিয়োগ আইনের পরিপন্থী নয়। কারণ উপাচার্যকে ৭৩-এর অধ্যাদেশে এ ক্ষমতা দেওয়া আছে। আমি মানবিক কারণে তাদের চাকরি দিয়েছি। যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের অধিকাংশই ছাত্রলীগের এবং আওয়ামী পরিবারের।’ তদন্ত কমিটির আহ্‌বায়ক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে এই নিয়োগ অবৈধ ও নিয়মবহিভর্‚ত। সুতরাং যারা এই নিয়োগের সঙ্গে সম্পৃক্ত, আমরা তাদের সাক্ষাৎকারের আওতায় এনেছি। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা একটা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।’ ড. মুহাম্মদ আলমগীর আরও বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ তথ্য-উপাত্ত ও প্রতিবেদন সংগ্রহ করেছি। সবার সঙ্গে কথা বলেছি। এখন আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেব। কারও প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ নয়। সম্পূর্ণ পক্ষপাতহীন প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর