বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

এখনো ঢাকামুখী মানুষ

প্রতিদিন ডেস্ক

এখনো ঢাকামুখী মানুষ

মাওয়া ঘাট থেকে গতকাল তোলা ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন শেষে কর্মস্থল ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় ফেরা মানুষের চাপ কমছেই না। গতকালও ঢাকামুখী বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীর চাপ দেখা গেছে। দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় করোনা ঝুঁকি নিয়েই ট্রাক-মাইক্রোবাসে গাদাগাদি করে কর্মস্থলে ফিরছেন শ্রমজীবী মানুষ। রয়েছে গলাকাটা ভাড়া আদায়ের অভিযোগ। আগামী শনিবার পর্যন্ত ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য।

মাদারীপুর : মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে কিছুতেই কমছে না যাত্রীদের চাপ। গতকাল সকাল থেকেই এই ঘাটে রাজধানীমুখী যাত্রীর উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাবাজার ঘাট থেকে ফেরিতে চড়ে শিমুলিয়া যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে ভেঙে ভেঙে। এতে চরম ভোগান্তির পাশাপাশি গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়াও। বিআইডব্লিটিসির টিআই আকতার হোসেন জানান, ঈদ উদ্যাপন শেষে কর্মস্থলে ফিরতে থাকা দক্ষিণবঙ্গের মানুষের ঢাকামুখী চাপ এখনো রয়েছে। প্রতিটি ফেরিতে যাত্রীর চাপ লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাবাজার ঘাট থেকে ফেরিগুলো যাত্রী ও পরিবহন নিয়ে ২৪ ঘণ্টাই চলছে। পারাপারের অপেক্ষায় কোনো গাড়ি নেই। সব গাড়ি রানিং রয়েছে। ঘাটে গাড়ি আসছে, ফেরিতে চলে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে ঘাটে ১৮টি ফেরি চলছে।

রাজবাড়ী : ঈদুল ফিতর শেষে কর্মস্থলে ফেরা ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ থাকবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। গতকাল দুপুরে ফেরিঘাটে ঈদ শেষে ঢাকামুখী যাত্রীরা এ তথ্য জানান। ফেরি পারাপারের জন্য দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেক যাত্রী। যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, খুচরা টাকার সংকটের কথা বলে যাত্রীপ্রতি ২৫ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা ভাড়া নিচ্ছেন ফেরিঘাটের একটি অসাধু চক্র। ঢাকামুখী যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, দৌলতদিয়া ফেরিঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ফেরি পারাপার হচ্ছে। জনপ্রতি ৫ টাকা করে বেশি নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে টিকিট বিক্রেতারা। এতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে জানান তারা। দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. ফিরোজ শেখ বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যাত্রীদের পারাপার নিবিঘ্ন করতে। মাঝে মাঝে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। বর্তমানে ঈদ ফেরত যাত্রীর চাপ রয়েছে। সেই সঙ্গে পণ্যবাহী পরিবহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে এই রুটে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট ঘাট এলাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি রোধে কাজ করে যাচ্ছেন।

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) : ঈদের তিন দিনের ছুটি শেষ হওয়ায় কর্মজীবী হাজারো নারী-পুরুষ যে যেভাবেই পারছেন ছুটছেন গন্তব্য স্থানে। করোনাভাইরাসের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নেই দূরপাল্লার বাস। তারপরেও ঝুঁকি নিয়ে পিকআপ, সিএনজি মাহেন্দ্র বা লোকাল বাসে আগের চেয়ে তিন-চারগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ছুটছেন ঢাকার দিকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি-ইলিয়টগঞ্জ, গৌরীপুর, দাউদকান্দির বলদাখাল বড় বাস স্ট্যান্ডে দেখা যাচ্ছে হাজারো মানুষের ভিড়। কেউ মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। রাস্তায় দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস না থাকলেও মাইক্রোবাস, পিকআপ ও মালবাহী ট্রাকে ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে রওয়ানা হয়েছেন হাজারো মানুষ।

শেরপুর (বগুড়া) : পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন শেষে বগুড়ার শেরপুরসহ আশপাশের তিন উপজেলার কর্মজীঈ মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। করোনা সংক্রমণ রুখতে সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় দূরপাল্লার বাস বন্ধ। এরপরও করোনা ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প যানবাহনে গাদাগাদি করে কর্মস্থলে যাচ্ছেন তারা। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকার অজুহাতে গলাকাটা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। সরেজমিন পৌর শহরের ধুনটমোড় এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকায় কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য অসংখ্য মানুষ জড়ো হয়েছেন। যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা। কোনো ট্রাক বা মাইক্রোবাস দাঁড়াতে দেখলেই লোকজন হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। নারী-পুরুষ, শিশু গাদাগাদি করে রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়েই পণ্যবাহী কিংবা খালি ট্রাকে উঠে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। এ ছাড়া সরকারি বিধি-নিষেধ থাকায় দুই-একটি নামিদামি কোম্পানির ব্যানারের বাসগুলো বন্ধ থাকলেও দূরপাল্লার অন্যান্য কমদামি ব্যানারের দুই-একটি বাস চলছে। এসব যানবাহনে ঢাকায় যেতে ইচ্ছামাফিক ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর