শুক্রবার, ২১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

হাসপাতালের ৮৩ ভাগ শয্যাই ফাঁকা

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ১৪৫৭, মৃত্যু ৩৬

শামীম আহমেদ

হাসপাতালের ৮৩ ভাগ শয্যাই ফাঁকা

৯৫ শতাংশের বেশি করোনা রোগী বাড়িতে চিকিৎসা নেওয়ায় দেশের কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর ৮৩ শতাংশের বেশি শয্যাই এখন ফাঁকা। এর মধ্যে ৮৪ দশমিক ৩০ শতাংশ সাধারণ শয্যা ও ৭৩ শতাংশ আইসিইউতে কোনো রোগী ভর্তি নেই। সারা দেশে ৪৫ হাজার ৪০০ কভিড রোগী চিকিৎসাধীন থাকলেও হাসপাতালে ভর্তি আছেন মাত্র ২ হাজার ১৯৮ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া তথ্যে এমনটা জানা গেছে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ৪৩৭টি নমুনা পরীক্ষায় দেশে নতুন করে ১ হাজার ৪৫৭ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ ছাড়া ভারতফেরত বাংলাদেশিদের মধ্যে করোনা শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছেই। গত এক সপ্তাহে যশোর, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা ও মাগুরায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা ভারতফেরত মোট ২১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে যশোরে ৬ মাস ও ১০ বছর বয়সী দুই শিশুসহ তিনজন, সাতক্ষীরায় ১১ জন, চুয়াডাঙ্গায় তিনজন ও মাগুরায় তিনজনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। গত এক দিনে সারা দেশে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৩৭৮ জন করোনা রোগী। মারা গেছেন ৩৬ জন। গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৯৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১২ হাজার ২৮৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ২৭ হাজার ৫১০ জন। মৃত ও সুস্থ বাদে চিকিৎসাধীন আছেন ৪৫ হাজার ৪০০ জন। এর মধ্যে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৩ হাজার ২০২ জন, যা মোট চিকিৎসাধীন রোগীর ৯৫ দশমিক ১৬ শতাংশ। দেশের সরকারি-বেসরকারি করোনা হাসপাতালগুলোয় আইসিইউসহ মোট শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ১৬২টি। এর মধ্যে গতকাল ফাঁকা ছিল ১০ হাজার ৯৬৪টি, যা মোট শয্যার ৮৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। ১১ হাজার ৯৯১টি সাধারণ শয্যার মধ্যে রোগী ভর্তি ছিল ১ হাজার ৮৮২ টিতে। ১ হাজার ১৭১টি আইসিইউর মধ্যে রোগী ভর্তি ছিল ৩১৬ টিতে। ৯৫ শতাংশের বেশি রোগী বাড়িতে চিকিৎসা নিলেও ৯৭ শতাংশের বেশি মৃত্যুর খবর আসছে হাসপাতাল থেকে। আবার সর্বাধিক আধুনিক হাসপাতাল থাকার পরও এখন পর্যন্ত অর্ধেকের বেশি মৃত্যু হয়েছে শুধু ঢাকা বিভাগে। দেশের মোট কভিড-১৯ সাধারণ শয্যার ৪৩ দশমিক ৬২ ভাগ (৫ হাজার ২৩১টি) ও মোট আইসিইউর ৭২ ভাগই (৮৪৫টি) ঢাকা বিভাগে। এ ছাড়া ৮৪৩টি হাই ফ্লো নেজাল ক্যানুলাসহ আইসিইউ সমতুল্য শয্যা, ৩১০টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটরসহ এইচডিইউ সমতুল্য শয্যা রয়েছে ঢাকায়। তার পরও সর্বাধিক মৃত্যু গুনতে হচ্ছে এই বিভাগকেই। গতকাল পর্যন্ত মোট মৃত্যুর ৫৭ দশমিক ৬৭ ভাগই হয়েছে ঢাকায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় মানুষ হাসপাতালে আসছে। তাই হাসপাতালেই হচ্ছে অধিকাংশ মৃত্যু। আর ঢাকায় জনঘনত্বের কারণে সংক্রমণ বেশি। তাই মৃত্যুও বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৬ জনের মধ্যে ৩৫ জনেরই মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। ১ জনের মৃত্যু হয়েছে বাড়িতে। মৃতদের মধ্যে ২৬ জন ছিলেন পুরুষ ও ১০ জন নারী। এর মধ্যে ১২ জন ঢাকায়, ১৪ জন চট্টগ্রামে, ৩ জন রাজশাহীতে, ২ জন খুলনায়, ১ জন বরিশালে, ৩ জন সিলেটে ও ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগে মারা গেছেন। বয়স বিবেচনায় মৃতদের মধ্যে ১৯ জন ছিলেন ষাটোর্ধ্ব, ৯ জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, ৫ জন চল্লিশোর্ধ্ব, ১ জন ত্রিশোর্ধ্ব ও ২ জনের বয়স ছিল ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর