শুক্রবার, ২১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে কাউনের চাষ

খন্দকার একরামুল হক সম্রাট, কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে কাউনের চাষ

কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার চরে কাউন চাষ করছেন কৃষক। উলিপুর উপজেলার বিভিন্ন চরে চলতি মৌসুমে কাউনের ফলন ভালো হওয়ায় নতুন স্বপ্ন দেখছেন তারা। পরপর কয়েক দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চরের কৃষক। তার ওপর নদী ভাঙন। এ সময় কাউন চাষ তাদের আশার আলো জুগিয়েছে। একসময় মঙ্গাপীড়িত এ অঞ্চলের মানুষ ভাতের বিকল্প হিসেবে কাউনের চালের ভাত খেয়ে বাঁচতেন। বর্তমানে কাউনের চালের পিঠা, পায়েস, মলাসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী গ্রামের মানুষের পাশাপাশি শহরের মানুষের শখের মুখরোচক খাবারে পরিণত হয়েছে।

চলতি মৌসুমে উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্যোগে খরিফ-১ স্থানীয় উন্নত জাতের কাউন চাষ করেছেন বেশ কিছু কৃষক। উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত চরের বুড়াবুড়ি, সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, হাতিয়া ও তিস্তা নদীর অববাহিকায় থেতরাই, দলদলিয়া, গুনাইগাছ ও বজরা ইউনিয়নের শতাধিক চর ও দ্বীপচরে কাউন চাষ করেছেন কৃষক। জানা যায়, এসব চরে এখন কাউন চাষে সবুজের সমারোহ। ধু-ধু সাদা বালুচরগুলো এখন সবুজময়। নতুন স্বপ্নে বিভোর চরবাসী। বিস্তীর্ণ চরজুড়ে কাউনের খেতে কৃষকের হাসি। বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের বিন্দুর চরের কৃষক বিন্দু মিয়া বলেন, ‘এ বছর আমি দেড় একর জমিতে কাউন চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। এ চাষে উৎপাদন ব্যয় কম হওয়ায় দিন দিন আমাদের অনেক চাষির আগ্রহ বাড়ছে।’ কৃষক এ বছর বাজারে কাউনের কাক্সিক্ষত দাম পেলে আগামীতে কাউন চাষ বাড়ার প্রত্যাশা তাদের। অন্য চরের কাউন চাষি মিজানুর রহমান, বাবর আলী, আবদুস সামাদ জানান, আগে কাউন চাষ তেমন ছিল না। এ বছর ব্যাপকভাবে চাষ করেছেন। উলিপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এ উপজেলার আট ইউনিয়নের চরাঞ্চলে কাউনের আবাদ ২ হাজার ১৩৭ বিঘা জমি ছাড়িয়ে গেছে। অল্প খরচে উৎপাদিত প্রতি মণ কাউন বাজারে ২২০০-২৪০০ টাকায় বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে অধিক মুনাফার আশায় চরাঞ্চলের এসব চাষি নতুন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘চরাঞ্চলের জমিতে কম খরচে লাভজনক কাউন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত চাষিদের মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন।’

সর্বশেষ খবর