শনিবার, ২২ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

স্থাপত্যের নিদর্শন সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ

আবদুল বারী, নীলফামারী

স্থাপত্যের নিদর্শন সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ

নীলফামারীর সৈয়দপুর বাংলাদেশের প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে একটি। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এই শহরটি অনেক আগে থেকে প্রসিদ্ধ হলেও অনেকের কাছে সৈয়দপুর ‘রেলের শহর’ বলে বেশি খ্যাত। এই শহরের প্রাচীন সৌন্দর্যের স্থাপত্য নিদর্শন হচ্ছে সৈয়দপুরের ‘চিনি মসজিদ’। যা অনেকের কাছে ‘চীনা মসজিদ’ নামে বেশি পরিচিত। মসজিদটি নীলফামারী সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সৈয়দপুরে অবস্থিত। ঐতিহাসিক এই মসজিদ নির্মাণের প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস বেশ সুদীর্ঘ। সৈয়দপুর শহরের উত্তরে ইসলামবাগ এলাকায় ১৮৬৩ সালে ঐতিহ্যবাহী চিনি মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রথম দিকে এটি দোচালা ছোট একটি টিনের ঘর ছিল। পরবর্তীতে ১৯২০ সালে হাজী হাফিজ আবদুল করিমের উদ্যোগে ৩৯ ফুট বাই ৪০ ফুট আয়তনবিশিষ্ট মসজিদটির প্রথম অংশ পাকা করা হয়। হাজী আবদুল করিম নিজেই মসজিদটির নকশা এঁকেছিলেন। পুনরায় ১৯৬৫ সালে মসজিদের দক্ষিণ দিকে ২৫ বাই ৪০ ফুট আয়তনবিশিষ্ট দ্বিতীয় অংশ পাকা করা হয়। সম্প্রতি এর আয়তন আরও বাড়ানো হয়েছে। এই চিনি মসজিদের সারা অবয়ব রঙিন উজ্জ্বল চীনা মাটির পাথরের টুকরো দ্বারা আবৃত। ১৯৬৫ সালে বগুড়ার একটি গ্লাস ফ্যাক্টরি চিনি মসজিদের জন্য প্রায় ২৫ টনের মতো চীনা মাটির পাথর দান করে।

এ ছাড়া সেই সময় কলকাতা থেকেও ২৪৩ খানা শংকর মর্মর পাথর এনে লাগানো হয় এই মসজিদে। ঐতিহ্যবাহী চিনি মসজিদের ৪৬টি মিনারসহ ৪টি বড় গম্বুজ রয়েছে। মসজিদে প্রবেশের জন্য উত্তরে ও দক্ষিণে একটি করে দরজা রয়েছে। মসজিদের দোতলায় একটি ভবনসহ পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ দেখার জন্য বহু বিদেশি পর্যটকের আগমনের ইতিহাস রয়েছে। স্থাপত্যের নিদর্শন এই চিনি মসজিদ দেশের কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধানও পরিদর্শন করে গেছেন। ইসলামের মহিমা প্রচার যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি ইসলাম অনুসারীদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। মসজিদটির ডানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বামে একটি ইমামবারা রয়েছে। আর পশ্চিমে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কবরস্থান।

সর্বশেষ খবর