পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাঁচটি ওয়াগন (মালগাড়ি) চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে ঢাকা রুটে চালু হতে যাচ্ছে একটি ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’। রাজশাহী থেকে মাত্র এক টাকা ১৭ পয়সায় এই আম রাজধানী ঢাকায় পাঠাতে পারবেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এক কেজি আমের ভাড়া লাগবে    ১ টাকা ৩০ পয়সা। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে এক কেজি আম ঢাকার বিমানবন্দর, তেজগাঁও বা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পরিবহন করতে খরচ পড়বে ১ টাকা ১৭ পয়সা। ক্যারেট প্রতি লেবার খরচ ধরা হয়েছে ১০ টাকা। কোনো শ্রমিক বেশি নিলে বা কেউ অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেলওয়ের প্রত্যেক লেবারকে নির্ধারিত লাল রঙয়ের পোশাকও দেওয়া হয়েছে। নিয়মানুযায়ী ট্রেন ছাড়ার আগে যে কেউ তাদের মালামাল বুকিং দিতে পারবেন। প্রতিটি ওয়াগনের ধারণক্ষমতা রয়েছে ৪৩ মেট্রিক টন। বহন করা হবে ৩০ মেট্রিক টন। আম যেন অতিরিক্ত গরম ও চাপে নষ্ট না হয়ে যায় সে কারণে ধারণক্ষমতার কম পণ্য বহন করা হবে।

সব কিছু ঠিক থাকলে গত বছরের ধারাবাহিকতায় আগামী ২৫ মে বিকাল থেকে এই রুটে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’ যাত্রা শুরু করবে বলে জানিয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকশী) মো. নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে আমসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য পার্সেল পরিবহনের জন্য এবারও বিশেষ এই ট্রেনটি চালু করা হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যখন ঢাকা যাবে তখন ট্রেনটির নাম হবে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন-২’। আর ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফেরার পথে নাম হবে ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন-১’। ট্রেনটি সপ্তাহে প্রতিদিনই চলাচল করবে। ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনটি প্রতিদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিকাল ৪টায় ছেড়ে আসবে। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছবে ৫টা ২০ মিনিটে। পণ্য তোলার জন্য ট্রেনটি এখানে ৩০ মিনিট বিরতি দেবে। বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে ট্রেনটি আবারও ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে এসে ট্রেনটি আমনুরা বাইপাস, কাঁকনহাট, রাজশাহী, সরদহ, আড়ানি ও আব্দুলপুর বাইপাস স্টেশনে থামবে। এসব স্থানে আমসহ পার্সেল পণ্য ট্রেনে তোলা হবে।

এর পর যমুনার ওপারে থাকা টাঙ্গাইল, মির্জাপুর, কালিয়াকৈর, জয়দেবপুর, টঙ্গী, ঢাকা বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও এবং কমলাপুর স্টেশনে থামবে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন।

ফেরার পথে ট্রেনটি রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও, টঙ্গী, টাঙ্গাইল এবং সিরাজগঞ্জ, চাটমোহর এবং রাজশাহী স্টেশনে থামবে। তবে যাত্রাপথে কোথাও সাধারণ যাত্রী এ ট্রেনে তোলা হবে না।

এর আগে গত বছর ৫ জুন প্রথমবারের মতো এই রুটে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়। গেল বছরের জুন-জুলাইয়ে মোট ৮৫৭ মেট্রিক টন আম ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে পাঠানো হয়েছিল। এতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আয় হয় ৯ লাখ ২৯ হাজার ৮৬৯ টাকা। তবে এবার ঢাকা ছাড়াও খুলনা ও চট্টগ্রামের দিকে চাহিদা অনুযায়ী আম পাঠানো হবে। সেক্ষেত্রে ডেডিকেটেড ট্রেনে এসব পণ্য পাঠানো হবে। পরে এই বিষয়গুলো আলোচনাসাপক্ষে চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।