সোমবার, ২৪ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

দৃষ্টিনন্দন শ্রীমঙ্গলেশ্বরী কালীমন্দির

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

দৃষ্টিনন্দন শ্রীমঙ্গলেশ্বরী কালীমন্দির

শৈল্পিক কারুকাজ আর অপূর্ব নির্মাণশৈলীতে দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে নবনির্মিত শ্রীশ্রী শ্রীমঙ্গলেশ্বরী কালীমন্দির। পুরো মন্দিরটিতে দেওয়া  হয়েছে লাল ও সাদা রং। আর কারুকাজগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সোনালি ও ব্রোঞ্জ রঙে। মন্দিরটি দেখলে মনে হয়, যেন রক্তজবা ফুটে আছে। পাঁচ স্তরবিশিষ্ট এই মন্দিরটি দেখা যাবে শহরের চৌমুহনা থেকে কলেজ সড়ক হয়ে একটু এগিয়ে রাস্তার বাম পাশে। মন্দিরের প্রধান ফটক পেরিয়ে ভিতরে রয়েছে আরেকটি ছোট ঘর। সেখানে রাখা হবে কালীমূর্তি। এই ঘরে সিমেন্টের কারুকাজে নির্মাণ করা হয়েছে কালী মায়ের আসন। সোনালি রং শোভিত                আসনটি নজর কাড়বে যে কারও। রয়েছে অত্যাধুনিক ঝাড়বাতি ও আলোকসজ্জা। অনিন্দ্যসুন্দর এই মন্দিরটি দেখে এক পলকেই মুগ্ধ হবেন যে কেউ। মন্দির পরিচালনা কমিটি মনে করেন, শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই নন, এই মন্দিরের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হবেন এ উপজেলায় ঘুরতে আসা দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও। মন্দির নির্মাণ কমিটির সদস্য দেবাশীষ সেন জানান, এ উপজেলায় এটাই সব থেকে ব্যয়বহুল একক মন্দির। এই মন্দির নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা। ২০১২ সালে মন্দিরটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। মন্দিরটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। মন্দিরের  প্লান, ডিজাইন ও নির্মাণ কাজ তদারকি করেন প্রকৌশলী নিশিত রঞ্জন দত্ত পুরকায়স্থ। তিনি জানান, ১৩০০ বর্গফুট জায়গার ওপর এই মন্দির নির্মাণ করা হয়। মন্দিরের উচ্চতা ৪৮ ফুট। প্রবেশ এবং বের হওয়ার জন্য মন্দিরের চারদিকে পাঁচটি ফটক রয়েছে। মন্দিরটি নির্মাণও করা হয়েছে পাঁচটি স্তরে। রয়েছে ছোট বড় পাঁচটি চূড়া। কারুকাজে রয়েছে জবাফুল, বেলপাতা ও স্বস্তিকা। কালীমাতাকে প্রদক্ষিণের জন্য মূল মন্দিরের ভিতরে রাখা হয়েছে ফাঁকা বারান্দা। মেঝেতে দেওয়া হয়েছে মর্বেল পাথর।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দ্বীপেন্দ্র ভট্টাচার্য জানান,  ঊনবিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকে বীরচন্দ্র ধর ও ভাড়াউড়া চা বাগানের কয়েক ধর্মানুরাগী জমি দান করে এই কালীবাড়ী প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬২ সালে এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে শ্রীমঙ্গলের অনান্য ঘরবাড়ির সঙ্গে কালীমন্দিরও পুড়ে যায়। পরে শহরের প্রাক্তন চা বাগান মালিক মৃত অজিত চৌধুরী পাকা কালী ও দুর্গামন্দির তৈরি করে দেন।

কালীবাড়ির সেবাইত ঝুমুর ভট্টাচার্য্য জানান, এখানে নিত্য কালীপূজা দেওয়া হয়। প্রতি বছর দুর্গাপূজা করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন মানুষের মানত পূজা করা হয়। প্রতিদিনই ভক্ত সমাগমে মন্দির প্রাঙ্গণ মুখরিত থাকে। মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. হরিপদ রায় বলেন, এই কালিবাড়িতে মন্দির কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে। তার জন্য মাস্টার প্লান করা আছে। নবনির্মিত কালীমন্দিরের পার্শ্বেই দুর্গামন্দির করা হবে। এর পাশে হবে শিবমন্দির, ভোগমন্দির ও আবাসন মন্দির। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জাতি-ধর্মের দর্শনার্থীরা এসে প্রার্থনা ও মন্দির কমপ্লেক্সের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন।

সর্বশেষ খবর