মঙ্গলবার, ২৫ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

ফুলের চাষ বাড়ছে বগুড়ায়

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

ফুলের চাষ বাড়ছে বগুড়ায়

বগুড়ায় দিন দিন ফুলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাঁদা ফুল দিয়ে চাষ শুরু হলেও বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে কয়েক প্রকার গোলাপ চাষ হচ্ছে। ফুল চাষিরা রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা, বাগান বিলাস, চন্দ্র মল্লিকা, ডালিয়া, কসমস, দোলনচাঁপা, নয়নতারা, মোরগঝুঁটি, কলাবতীসহ বিভিন্ন নামের ফুলের চাষ করছে। বিক্রিতে সমস্যা নেই বলে ফুল চাষ লাভজনক, তাই অনেকেই ঝুঁকে পড়ছেন ফুল চাষে।

বগুড়ায় পরিত্যক্ত জমি, খাদ্য শস্য উৎপাদন কম হয় এমন জমি বেছে নিচ্ছেন ফুল চাষিরা। এতে যেমন কর্মসংস্থান হচ্ছে তেমনি অন্য জেলা থেকে ফুল আমদানি ও খরচ কমে গেছে। বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ দিন দিন বাড়ছে। বিভিন্ন দিবস, বিয়েসহ সামাজিক, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে ফুলের কদর বেড়েছে বগুড়ায়। বিভিন্ন দিবসে শহর ছাড়াও গ্রামের মানুষের মধ্যেও ফুল কেনার প্রবণতা বেড়েছে। বাণিজ্যিক নগরী খ্যাত বগুড়ার ফুল ব্যবসায়ীরা একসময় যশোরসহ অন্যান্য জেলা থেকে ফুল নিয়ে আসতেন। এ জেলায় উৎপাদিত ফুল দিয়েই এখন চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হচ্ছে। বগুড়া শহরে গড়ে উঠেছে ফুলের আলাদা মার্কেট। সদর উপজেলা, শাজাহানপুর, সোনাতলা ও শিবগঞ্জসহ কয়েকটি উপজেলায় চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে ফুলচাষ করছেন। ফুলচাষি জান্নাতুল ফেরদৌস জনি জানান, বগুড়ার যে ফুল বিক্রি হয় তা যশোর থেকে আসত। বগুড়ায় ফুল চাষ করলে সহজেই মানুষ ফুল পাবে, স্থানীয় ক্রেতা বিক্রেতারা কম মূল্যে ফুল পাবে সেই চিন্তা থেকেই ফুল চাষ শুরু করেন। ফুল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন তিনি।

বগুড়া শহরের শহীদ খোকন পার্ক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন স্থানে ১৭টি দোকান নিয়ে গড়ে উঠেছে ফুলের মার্কেট। এখান থেকেই ফুল ক্রয়-বিক্রয়সহ অন্যান্য জেলায় যাচ্ছে বগুড়ার চাষকৃত ফুল। ফুল বিক্রেতা কোরবান আলী জানান, বগুড়ায় ফুল চাষ হওয়ায় তাজা ফুল যেমন পাওয়া যায় তেমনি খরচ কমে যাওয়ার কারণে কৃষকদের লাভ বেশি হচ্ছে। তিনি আরও জানান, আগে যশোর থেকে ফুল আসতা। এতে কিছু ফুল নষ্ট হয়ে যেত। এখন বগুড়ায় চাষ হওয়ার কারণে নষ্ট হয় না। সে কারণেও লাভের অংশ থাকছে। আবার বগুড়ার ফুল কম দামে ক্রেতাদের কাছে বিক্রিও করা যায়। বগুড়া জেলা ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লক্ষণ দাস অমিত বলেন, যশোরসহ অন্যান্য জেলা থেকে সকালে ফুল পাঠালে তা বগুড়ায় আসত রাতে। সারা দিনে বাসে-ট্রাকে আসার ফলে সেই ফুলের ঘ্রাণ থাকত না। সতেজতা থাকত না। বগুড়ায় ফুল চাষ হওয়ায় সতেজ ফুল পাওয়া যাচ্ছে, এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই লাভবান হচ্ছে। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, বগুড়া জেলায় প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে ১৫ প্রকারের ফুলের চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গোলাপ যেমন আমেরিকান হ্যারি, ডাচ গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা, বাগান বিলাস, চন্দ্র মল্লিকা, ডালিয়া, কসমস, দোলনচাঁপা, নয়নতারা, মোরগঝুঁটি, কলাবতী ও জবা। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরে আলম জানান, এ উপজেলায় ১৫ প্রকারের ফুল চাষ হয়। স্বল্প খরচে লাভবান হওয়ায় ফুল চাষে চাষিরা আগ্রহী হচ্ছে। কৃষি বিভাগ প্রতিনিয়ত চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর