মঙ্গলবার, ২৫ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
আজ ভয়াল সেই ২৫ মে

ঘূর্ণিঝড় আইলার ক্ষত শুকায়নি এক যুগেও

মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা

আজ ভয়াল সেই ২৫ মে। ২০০৯ সালের এই দিনে ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সুন্দরবন ঘেঁষা সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনির উপকূলীয় জনপদ। আইলার ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ এখনো কমেনি। লোনা পানির কারণে এলাকায় ফসল ফলে না, নেই কোনো কর্মসংস্থান। রয়েছে তীব্র খাবার পানির সংকট, রাস্তাঘাটের সমস্যা, আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৭ কিলোমিটার নদীর বেড়িবাঁধগুলোয় আবারও ফাটল ও ভাঙন দেখা দেওয়ায় চরম ঝুঁকিতে আছেন এলাকাবাসী।

আইলা দুর্গত এলাকার মানুষের এখনো কাটছে দুর্বিষহ জীবন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতিবছরই উপকূলবাসীকে আইলা, সিডর, মহাসেন, বুলবুল ও আম্ফানের মতো প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি পড়তে হচ্ছে। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ও এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সরকারের বিশেষ বরাদ্দের জন্য সাতক্ষীরা জেলাকে অতি দুর্যোগপ্রবণ ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল।

ভুক্তভোগীরা জানান, অর্থের অভাবে বসতঘর নির্মাণ করতে না পেরে এখনো প্রখর রোদ, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানবেতর জীবন-যাপন করছে অনেকেই। নেই কোনো কর্মসংস্থান। অন্ন, বস্ত্র, খাবার পানি আর বাসস্থানের জন্য এখনো চারদিকে চলছে হাহাকার।

উল্লেখ্য, এক যুগ আগে আইলার আঘাতে মুহূর্তের মধ্যে সাতক্ষীরা  জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি উপজেলার উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে যায়। কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর স্বাভাবিকের চেয়ে ১৪-১৫ ফুট উচ্চতায় সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস এসে নিমেষেই ভাসিয়ে নিয়ে যায় নারী ও শিশুসহ কয়েক হাজার মানুষ, হাজার হাজার গবাদি পশু আর বসত ঘরবাড়ি। ক্ষণিকের মধ্যে গৃহহীন হয়ে পড়ে লাখো পরিবার। লাখ লাখ হেক্টর চিংড়ি আর ফসলের খেত তলিয়ে যায়। ধ্বংস হয়ে যায় উপকূল রক্ষা বাঁধ আর অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে শুধু সাতক্ষীরায়ই নিহত হন ৫৫ জন নারী, পুরুষ ও শিশু। আর আহত হন সহস্রাধিক মানুষ।

সর্বশেষ খবর