শনিবার, ২৯ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

পাবনায় লিচুর ফলন বিপর্যয়

সৈকত আফরোজ আসাদ, পাবনা

পাবনায় লিচুর ফলন বিপর্যয়

পাবনায় লিচুর ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রতি গ্রীষ্মেই এ মধুফল ঘিরে এলাকায় উৎসবের আমেজ বইলেও, এবার চিত্রটা ভিন্ন। সঠিক নিয়মে পরিচর্যার পরেও বেশির ভাগ গাছে মুকুল আসেনি। তীব্র খরায় গুটি ঝরে পড়ায় আশানুরূপ ফলন পাননি চাষিরা।

দেশি, চায়না  ও মোজাফফরী জাতের লিচু ভাঙা শুরু হয়ে গেছে। তবে বোম্বে লিচু ভাঙা শুরু হবে জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে। লিচু ব্যবসায়ীরা জানান, পাবনার লিচু প্রধান এলাকা ঈশ্বরদীর আওতাপাড়া, দাশুড়িয়া, মিরকামারী, পাকশী, সাহাপুর, লক্ষ্মীকুন্ডা, ছিলিমপুর, বক্তারপুর, সদরের টিকরি, দাপুনিয়া, মধুপুরসহ বিভিন্ন এলাকার লিচু ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে আটি লিচুগুলো বাজারজাত করা হয়েছে, এখন বাজারে আসছে চায়না ও মোজাফফরী জাতের লিচু। এরপর জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাজারে আসবে উচ্চ ফলনশীল বোম্বাই জাতের লিচু। লিচু ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান জানান, প্রথম থেকেই এবার লিচুর ভালো দাম পাচ্ছে কৃষকরা। বাগান থেকে প্রায় ১৬০ থেকে ২০০ টাকা শ আটি লিচু বিক্রি হচ্ছে। চায়না জাতের লিচু প্রতি শ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। বাজার চড়া থাকলেও ফলন কম হওয়ায় উৎপাদন খরচ তোলা নিয়েই সংশয়ে রয়েছেন লিচু চাষি ও ব্যবসায়ীরা। ঈশ্বরদী উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের লিচুবাগান মালিক মেহেদী হাসান জানান, এ বছর খরার কারণে বেশির ভাগ লিচু গাছে মুকুলই আসেনি। লিচু বড় হওয়ার সময় পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় অনেক লিচু গাছেই নষ্ট হয়ে যায়। অধিকাংশ এলাকায় লিচু বাগানে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ লিচুর ফলন হয়েছে আর বাকিটা নষ্ট হয়ে গেছে। সার, বিষ দিয়ে ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করলেও প্রকৃতি অনুকূলে না থাকায় এ বছর লিচুর ফলন বিপর্যয় হয়েছে। চাষি ও ব্যবসায়ীরা কাক্সিক্ষত ফলন না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। ছিলিমপুর গ্রামের লিচু চাষি আবদুল কালাম জানান, তিনি এ বছর তিনটি বাগানে লিচুর আবাদ করেছেন। প্রায় আড়াই লাখ টাকা দিয়ে তিনটি লিচু বাগান কিনে সাড়ে তিন থেকে ৪ লাখ টাকার লিচু বিক্রির টার্গেট থাকলেও ফলন বিপর্যয়ের কারণে এখন খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার তিনটি বাগানে প্রায় দেড় শতাধিক লিচু গাছ রয়েছে, যার বেশির ভাগই হাইব্রিড বোম্বে ভ্যারাইটির লিচু। ভালো দাম পেয়ে তিনি খুশি হলেও ফলন বিপর্যয়ে আশানুরূপ লাভ হবে না বলে তিনি দাবি করেন। এ ব্যাপারে পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আবদুল কাদের বলেন, এ বছর পাবনায় ৩,৪০০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে, যা থেকে লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৪১ হাজার মেট্রিক টন। মূলত শীতের শেষে হঠাৎ করেও গরম আবহাওয়া চলে আসায় অনেক গাছেই মুকুল না এসে নতুন পাতা বের হয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এমন হয়েছে। তবে, খরায় প্রায় ৫০ শতাংশ লিচু নষ্ট হয়ে গেছে বলে কৃষকরা দাবি করলেও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আবদুল কাদের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ লিচুর ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর