বৃহস্পতিবার, ৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
সংবাদ সম্মেলনে শফীপন্থিরা

হেফাজতের নামে কোনো কমিটি হলে তা প্রত্যাখ্যান করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর অনুসারী নেতারা বলেছেন, চক্রান্তের মাধ্যমে আবারও হেফাজতের নামে কোনো কমিটি ঘোষণা করা হলে তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করা হবে।

গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতারা এ কথা বলেন। ‘শায়খুল হাদিস আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)-এর ভক্তবৃন্দ’ ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামের সাবেক সাহিত্য সম্পাদক মাওলানা নুরুল ইসলাম জাদিদ বলেন, যারা আল্লামা শাহ আহমদ শফীর হত্যা মামলার স্বীকৃত আসামি, তারা হেফাজতের কর্ণধার থাকতে পারে না। আমরা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আহমদ শফীর রেখে যাওয়া আমানত হেফাজতে ইসলামের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। অচিরেই শীর্ষস্থানীয় ওলামাদের পরামর্শে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, আল্লামা শাহ আহমদ শফীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার মামলায় পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

শফী হত্যা মামলায় জুনায়েদ বাবুনগরীর গ্রেফতার চান কি না জানতে চাইলে হেফাজতের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, যাদের নাম এই হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত হিসেবে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তাদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি করছি। এ ছাড়া যাদের নাম আসেনি কিন্তু আমরা জানি তারা উসকানিদাতা ও এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তাদের গ্রেফতার চাই এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ফয়জুল্লাহ বলেন, পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদনে যা এসেছে সেটাই বাস্তব। এই তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। তিনি বলেন, আমরা কখনই নিশ্চুপ ছিলাম না। আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছি। পেশিশক্তি ব্যবহার করে কিছুক্ষণের জন্য তাদের অবস্থান মজবুত করেছে। আনাস মাদানীর হাট হাজারী মাদরাসার শিক্ষা সচিব পদে পুনর্বহালের বিষয়ে জানতে চাইলে মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, আনাস মাদানী যে দায়িত্বে ছিলেন তাকে সেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না এবং আইনগত কোনো বৈধতা ছিল না। যা করা হয়েছে সম্পূর্ণ অবৈধ। তার সঙ্গে একটা জুলুম করা হয়েছে। দুজন সদস্য মিলে ১৩ জনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তা বৈধও নয়। সুতরাং আনাস মাদানী সেখানে পুনর্বহালের কোনো প্রশ্ন নেই। কারণ তিনি তো সেখানে আছেনই। তবে শারীরিকভাবে সব সময় উপস্থিত নাও থাকতে পারেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জুনায়েদ বাবুনগরীর কমিটির নায়েবে আমির মধুপুরের পীর আবদুল হামিদের এখানে আসার পেছনে কোনো চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, আমি মনে করি না, মধুপুরের পীরের (আবদুল হামিদ) মতো মানুষ চাপের কাছে নতি স্বীকার করে তার অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। তিনি প্রথম থেকেই আমাদের সঙ্গে ছিলেন। বাবুনগরীর কমিটিতে অনেককেই পদ দেওয়া হয়েছিল, যারা নিজেরাও জানত না। 

লিখিত বক্তব্যে নুরুল ইসলাম বলেন, আহমদ শফী পরিবারের সদস্যদের ও তার অনুসারীদের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে। যারা মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে সম্প্রতি হেফাজতের যে আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে তা অবৈধ। আহমদ শফীর চরম বিরোধী ও বিদ্বেষীদের দ্বারা তিনি হেফাজতের কথিত আমির হয়েছিলেন। তাকে জনগণ মেনে নিতে পারেনি। সেই কারণে জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য অবৈধ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিলেন বাবুনগরী।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মুফতি নুরুল আমীন, মাওলানা আবদুল জব্বার, মাওলানা রুহুল আমীন উজানি, মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, মাওলানা আবদুর রশিদ মজুমদার, মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাইফী, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহীসহ আরও অনেকেই।

সর্বশেষ খবর