রবিবার, ৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে দুর্ভোগ

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গতকাল বৃষ্টির পানিতে সড়ক তলিয়ে যায় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দফায় দফায় বৃষ্টিপাতে গতকাল তলিয়ে যায় ঢাকার রাস্তাঘাট। অনেক এলাকার অলিগলি পানিতে থইথই ছিল। কোনো রাস্তায় ছিল হাঁটু পানিও। অনেক স্থানে ইঞ্জিনে পানি ঢুকে বন্ধ হয়ে যায় গাড়ি। জলজটে ভয়াবহ যানজট তৈরি হয় রাজধানীজুড়ে। রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরিবহন, গণপরিবহন, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরযানে দীর্ঘ সারি পড়ে। পাড়া-মহল্লার ময়লা, দুর্গন্ধযুক্ত পানি মাড়িয়ে প্রধান সড়কে পৌঁছেও যানবাহনের সংকটে পড়েন অনেকে। সেই সঙ্গে অদেখা খানাখন্দের ঝক্কি বাড়িয়েছে ভোগান্তি। জলজট ও যানজটে চরম দুর্ভোগে পড়ে রাজধানীবাসী। ১ জুন প্রায় তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে তীব্র জলজটের সৃষ্টি হয়েছিল রাজধানীতে।

গতকাল মিরপুর-১০সহ আশপাশের এলাকার রাস্তায় পানি জমে ছিল। বিশেষ করে সকালের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় ঢাকার মিরপুরের বেগম রোকেয়া সরণিতে। মিরপুরের কাজীপাড়ায় রাস্তায় হাঁটু পানি ছিল। জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পড়েন অফিসগামীরা। এ ছাড়া সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে আসাদ গেট, ধানমন্ডি-২৭ এলাকার সড়কে অনেক পানি জমে। পানিতে ডুবে বিকল হয় অনেক যানবাহন। এ ছাড়া আসাদগেট মোড় মিরপুর রোডে পানিতে ডুবে গাড়ি বিকল হওয়ায় মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনো গাড়ি আসাদগেট পার হতে পারছিল না। দীর্ঘ সময় পর যান চলাচল সাভাবিক হয় ওই এলাকায়। এদিকে দুপুরে খিলক্ষেত এলাকায় ফ্লাইওভারের মাথায় হাঁটু পানি ছিল। কুড়িল ফ্লাইওভারের খিলক্ষেত মাথায় হাঁটু পানি থাকায় গাড়িগুলো নামতেই পারছিল না। ফলে ফ্লাইওভারে গাড়ির জটলা সৃষ্টি হয়।

ঢাকায় ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি : গতকাল ঢাকায় সকাল থেকে দফায় দফায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে ঢাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দুপুর পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ১১১ মিলিমিটারে। গতকাল বিকালে একজন আবহাওয়াবিদ জানান, ঢাকায় অতি ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সময়ে ঢাকায় ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আরও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি আরও বলেন, পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী বাতাসের মিশ্রণের ফলে বজ্রমেঘ তৈরি হয়েছে এবং এই বজ্রমেঘ থেকেই বৃষ্টিপাত হয়েছে। জানা গেছে, সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ২৯ মি.লি., ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৬ মি.লি. ও দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৫৬ মি.লি. বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিছু কিছু এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ এলাকায় অবস্থান করছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ইয়াঙ্গুন উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে এবং তা আরও অগ্রসর হওয়ার জন্য আবহাওয়াগত পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে। আগামী তিন দিনে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এ ছাড়া রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী ও চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই বৃষ্টিপাতের কারণে তাপপ্রবাহ কিছু এলাকায় বয়ে যাওয়া বন্ধ হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

সর্বশেষ খবর