রবিবার, ৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

নতুন মাত্রায় কর্ণফুলী টানেল

৬৯ শতাংশ কাজ শেষ, নির্ধারিত সময়ে যান চলবে

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

নতুন মাত্রায় কর্ণফুলী টানেল

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যান চলাচলের লক্ষ্য নিয়েই দ্রুত এগিয়ে চলছে দেশের একমাত্র সুরঙ্গপথ কর্ণফুলী টানেল তৈরির কাজ। দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করতে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ থেকে শুরু করে দুই তীরে চলছে বিরামহীন কর্মযজ্ঞ। এরই মধ্যে কর্ণফুলী টানেলের সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৬৯ শতাংশ। সরকার ঘোষিত করোনার কঠোর বিধি নিষেধের কারণে টানেলের কাজের কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাঘাত হলেও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যান চলাচলের উপযোগী হবে স্বপ্নের টানেল। কর্ণফুলী টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে নানান প্রতিকূলতার মধ্যেও টানেলের কাজের গতি স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। বর্তমানে কাজের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৯ শতাংশ। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই টানেল যান চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ জানা যায়, কর্ণফুলী নদীর তলদেশের স্বপ্নের টানেল তৈরির কাজ চলছে দুরন্ত গতিতে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যে চলছে নদীর তলদেশে বিশাল কর্মযজ্ঞ। দেশি-বিদেশি প্রায় ১ হাজার ৪০০ শ্রমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনেই করছে বিরামহীন কাজ। ছুটি থেকে প্রকল্পে যোগদানের আগে বাধ্যতামূলক রাখা হচ্ছে কোয়ারেন্টাইনে। নদীর তলদেশে যান চলাচলের উপযোগী করতে চলছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও খনন কাজ। এরই মধ্যে প্রথম টিউবে যান চলাচলের উপযোগী সড়ক তৈরি করা হয়েছে ৭৮৮ মিটার। দ্বিতীয় টিউবের খনন কাজও শেষ হয়েছে দুই-তৃতীয়াংশ। ২ হাজার ৪৫০ মিটার দীর্ঘ দ্বিতীয় টিউবটি খনন হয়েছে ১ হাজার ৬০০ মিটার। নদীর তলদেশের পাশাপাশি দুই তীরের কাজের গতিও চলছে সমান তালে। টানেলের সংযোগ সড়কের কাজও এগিয়ে চলছে দ্রুততার সঙ্গে। একইভাবে সংযোগ সড়কের সঙ্গে যুক্ত উড়াল সেতু ও ব্রিজ কালভার্ডের কাজ চলছে দ্রুততার সঙ্গে। তবে প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের দাবি, করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে কাজের গতি স্বাভাবিক থাকলেও সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজের গতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত ঘাম ঝরাতে হচ্ছে। পাশাপাশি ছুটিতে যাওয়া কর্মকর্তা শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলায় কিছু ক্ষেত্রে কাজেরও ব্যাঘাত হচ্ছে। চীনের সাংহাই নগরীর আদলে চট্টগ্রাম শহর ও আনোয়ারাকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’র আদলে কর্ণফুলী নদীতে তৈরি হচ্ছে টানেল। মেগা এ প্রকল্পের একপ্রান্তে রয়েছে চট্টগ্রাম নগরী, বিমান ও সমুদ্রবন্দর। অপরপ্রান্তে আনোয়ারার ভারী শিল্প এলাকা। বিভক্ত দুই অংশকে সাংহাইয়ের আদলে একই সুতোয় যুক্ত করতে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বাংলাদেশ সরকার ও চাইনিজ এক্সিম ব্যাংক এ প্রকল্পের যৌথ অর্থায়ন করছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এটি চালু হলে প্রতি বছর প্রায় ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রকল্পটি চালু হলে পাল্টে যাবে চট্টগ্রাম তথা দেশের অর্থনীতি। বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে শিল্পকারখানা ও পর্যটন শিল্পের।

সর্বশেষ খবর