বুধবার, ৯ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

শখের আনারস বাগান এখন পর্যটন কেন্দ্র

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

শখের আনারস বাগান এখন পর্যটন কেন্দ্র

চারপাশে উঁচুনিচু টিলা। টিলাজুড়ে শুধু আনারসের গাছ। প্রতি গাছের মাথায় উঁচু হয়ে আছে আনারস। সবুজ আর হলুদ আনারসের মিষ্টি গন্ধে সব সময় মাতোয়ারা বাতাস। বাতাসই বয়ে বেড়ায় আনারসের সুমিষ্ট সুবাস।

এমন দৃশ্য সিলেটের ঢাকা দক্ষিণ দত্তরাইলের আবদুল মতিন চান মিয়া আনারস বাগানে। এখানে প্রতিদিন হাজারো দর্শক ভিড় করছেন। সব মিলে শখের আনারস বাগানটি এখন পরিচিতি পেয়েছে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। বাগানের আনারস বিক্রি করে এবার ৫০ লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১৮ সালে ব্যাংক কর্মকর্তা রইছ উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে গিয়েছিলেন দত্তরাইলের আবদুল মতিন চান মিয়ার ছেলে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী রাসেল আহমদ। শ্রীমঙ্গলে সারি সারি আনারস বাগান দেখে তার শখ জাগে বাগান করার। সহযোগিতার আশ্বাস দেন রইছ। ভাইদের সঙ্গে আলোচনা করে উদ্যোগ নেন বাগান সৃজনের। উত্তরাধিকারসূত্রে বিশাল ভূসম্পত্তির মালিক আবদুল মতিন চান মিয়ার আট ছেলে। বাড়ির পাশে ছয়টি টিলার ৬০ বিঘা জমি নিয়ে শুরু হয় আনারস লাগানোর কাজ। শ্রীমঙ্গল থেকে রইছ উদ্দিন সরবরাহ করেন চারা। একে একে টিলাগুলো আচ্ছাদিত হতে থাকে আনারস গাছে। প্রথম বছর খুব বেশি আনারস মেলেনি। যেটুকু পাওয়া গিয়েছিল সেগুলো বিতরণ করে দেওয়া হয় এলাকার লোকজন, আত্মীয়স্বজন, মসজিদ, মাদরাসা আর এতিমখানায়। গেল বছর পূর্ণতা পায় বাগান। আনারসে আনারসে ভরে ওঠে বাগান। প্রায় ৬৫ হাজার আনারস বিক্রি করে আয় হয় ৩০ লাখ টাকা। সেই সঙ্গে আবদুল মতিন চান মিয়ার আনারসবাগানের সুনামও ছড়িয়ে পড়ে সিলেটজুড়ে। ভালো ফলন হওয়ায় আরও ১০ বিঘা জায়গায় রোপণ করা হয় আনারসের চারা। এবারও বাগানে আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাগানের পরিচালক রাসেল আহমদ ও রইছ উদ্দিন আশা করছেন এবার ১ লাখের বেশি আনারস বিক্রির। আনারস বিক্রি থেকে আসবে প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

 

এ আনারসবাগানে সারা দিনই লেগে থাকে পর্যটকের ভিড়। বিকাল হলে ঢল নামে তাদের। গাড়ি ও মোটরসাইকেল নিয়ে হাজারো দর্শনার্থী আসেন বাগানে। বিশাল বাগানের টিলাভর্তি আনারস দেখে মুগ্ধ হন তারা। চান মিয়া আনারসবাগান শুধু পর্যটকের মধ্যেই সাড়া ফেলেনি। বাগানের সফলতা এলাকার মানুষকেও প্রভাবিত করছে। পড়ালেখা করে চাকরির পেছনে না ঘুরে উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী করছে এলাকার তরুণদের। ঢাকা দক্ষিণ এলাকাজুড়ে রয়েছে অসংখ্য টিলা। তাই আবদুল মতিন চান মিয়া আনারসবাগানের সফলতা দেখে এখন অনেকেই ভাবছেন নিজেদের টিলায় বাগান করার। এর দ্বারা এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা করছেন স্থানীয়রা।

 

 

সর্বশেষ খবর