বুধবার, ৯ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

করোনাকালে নার্সারিতে ভাগ্য

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

করোনাকালে নার্সারিতে ভাগ্য

বগুড়ায় নার্সারি ব্যবসা করে সফলতা পেয়েছেন কলেজছাত্রী তানজিম তারবিয়াত নিতু। করোনায় কলেজ বন্ধ হয়ে গেলে কিছু করার তাগিদ থেকে পরিবারের সহযোগিতায় তিনি প্রথমে ফুল চারা বিক্রি শুরু করেন। শুরুর পর এখন তিনি বগুড়া শহরের মাটিডালিতে রীতিমতো ফুল, ফল, বনসাঁইসহ হরেক রকমের চারা নিয়ে শোরুম দিয়ে বসেছেন। শূন্য দিয়ে শুরু হলেও তার নার্সারিতে এখন রয়েছে ২৭ লাখ টাকার চারা। জানা যায়, বগুড়া শহরের মাটিডালি এলাকার ব্যবসায়ী আরিফুজ্জামান আরিফ ও নাজনিন আকতারের কন্যা তানজিম তারবিয়াত নিতু। নিতু বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ (কমার্স) শ্রেণির ছাত্রী। তার একমাত্র ভাই রওশন আলী নবম শ্রেণির ছাত্র। নিতুর পরিবার ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী পরিবারের নিতু ছোট বেলা থেকেই স্বাধীনচেতা। ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনা ভাইরাসের প্রভাবের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে অন্য শিক্ষার্থীদের মতো তিনি ঘরবন্দী হয়ে যান। ঘরে বসে লেখাপড়া করার পরও তার প্রচুর সময় থাকত। অবসর সময় তার কাছে থমকে দাঁড়াত। নিতু কোনো রকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই প্রথমে ফুল চারা বিক্রি শুরু করেন। প্রথম দিকে ফুল চারা বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে কেনাবেচা করতে থাকেন। অনলাইনে কেনাবেচা শুরু করে দেখেন, তাতে খরচ বেশি আয় কম। চাহিদা ও ভালো লাভের আশায় তিনি নিজেদের প্রায় পাঁচ বিঘা জমির অর্ধেক অংশে ফুল ও ফলের চারা উৎপাদন শুরু করেন।

আর তার নার্সারি ব্যবসার নাম দেন ট্রি ওয়ার্ল্ড নার্সারি। ফুলের পাশাপাশি, বিভিন্নজাতের ফল, ঔষধি, ক্যাকটাস, অর্কিড, মসলা জাতীয় চারা উৎপাদন শুরু করেন। তিন মাস পর নিজের নার্সারি থেকে তৈরি করা চারা ক্রেতাদের মাঝে বিক্রি শুরু করেন। বিক্রিতে সফলতা পেলে তিনি বগুড়া শহরের মাটিডালিতে ট্রি ওয়ার্ল্ড শোরুম খোলেন। ট্রি ওয়ার্ল্ড নার্সারির নির্বাহী পরিচালক হয়ে যান দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী তানজিম তারবিয়াত নিতু। গত ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে তার নার্সারি ব্যবসার প্রসার ঘটলে বগুড়া সদর উপজেলার মানিকচক এলাকায় তিনি বাবার সহযেগিতা নিয়ে ১৬ বিঘা জমি ক্রয় করেন। কৃষি জমি কিনে তিনি সেখানে বিভিন্ন জাতের আমসহ বেশ কিছু ফুল ও ফলের চারা তৈরি শুরু করেছেন। জুলাই আগস্ট মাসে ফল চারা পুরোদমে বিক্রি শুরু হবে।

নিতুর চাচা শাহাদৎ হোসেন জানান, পরিবারের সহযোগিতা নিয়ে সে নার্সারি শুরু করেছে। পরিবারের সব সদস্য তাকে সহযোগিতা করছে। তিনি নিজেও নার্সারিতে সময় দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, মূলত শখের বসে শুরু করেছিল। কিন্তু চাহিদার কারণে সাফল্য আসছে।

সর্বশেষ খবর