শিরোনাম
রবিবার, ২০ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

দিনভর বৃষ্টি জনজীবনে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দিনভর বৃষ্টি জনজীবনে ভোগান্তি

দিনভর টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। ছবিটি গতকাল রাজারবাগ এলাকা থেকে তোলা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সারা দেশে গতকালও দিনভর বৃষ্টি ছিল। এতে মানুষকে দারুণ ভোগান্তি পোহাতে হয়। ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে পড়েন রাজধানীবাসীও।

দুই দিন ধরে সারা দিনই ঝরেছে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। এটি আরও এক-দুই দিন স্থায়ী হতে পারে বলে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে। সেই সঙ্গে ভারি বর্ষণ হতে পারে দেশের চারটি বিভাগে। আবহাওয়া অধিদফতর থেকে বলা হয়, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে সারা দেশেই এখন কমবেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আরও দুই দিন এমন বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তারপর কমতে শুরু করবে বর্ষণ।

এদিকে আষাঢ়ের টানা এ বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। বিশেষ করে ফুটপাথ ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি বেড়েছে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে রুটি-রুজির তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়ে কাকভেজা হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন তারা। আবার অনেকেই সকালে অফিসের উদ্দেশে বের হয়ে কাকভেজা হয়ে তাদের কর্মস্থলে পৌঁছাতে হয়েছে। তবে বৃষ্টির ভোগান্তির সঙ্গে যোগ হয়েছে যানবাহনের বাড়তি ভাড়া। সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, বৃষ্টিতে ভিজে ভাসমান হকাররা ফল ও শাকসবজিসহ বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করছেন। ক্রেতা না থাকলেও রুটি-রুজির তাগিদে আষাঢ়ের বৃষ্টিতে ভিজছেন তারা। একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, প্রতিদিন সকালে কারওয়ান বাজার থেকে সবজি কিনে এনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বিক্রি করি। গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির কারণে বেচাবিক্রি একেবারে নেই। খুব কষ্টে দিন পার করছি। তবুও রুটি-রুজির তাগিদে বের হতেই হয়। ঢাকায় গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ঈশ্বরদীতে ১৬৪ মিলিমিটার, টেকনাফে ১৬৩ মিলিমিটার, বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো আরও খবর- 

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর নিম্নাঞ্চলগুলো শুক্রবার দিবাগত রাত এবং গতকাল থেমে থেমে অঝোর ধারার বৃষ্টিতে নগরের ষোলশহর, মুরাদপুর, কাপাসগোলা, চাক্তাই, বাকলিয়া, ডিসি রোড, রহমতগঞ্জ, হালিশহর, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল, চান্দগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ফলে অনেকের ঘরে চুলোও জ্বলেনি। বাসিন্দাদের শুকনো খাবার খেয়ে থাকতে হয়েছে বলে জানা গেছে। খুলনা : দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সক্রিয় প্রভাবে খুলনায় গতকালও দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। এতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের হাজারো পরিবার। এদিকে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও ড্রেনে ধীরগতির সংস্কার কাজে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। ড্রেনগুলো পরিষ্কার না থাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে টানা বৃষ্টিতে শান্তিধাম মোড়, রয়েল মোড়, বানিয়াখামার, বাগমারা, মিস্ত্রিপাড়া, বাইতিপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। পথ চলতে গেলে ড্রেনের নোংরা কাদাপানিতে মাখামাখি হচ্ছেন নগরবাসী। ঝিনাইদহ : শুক্রবার দিনব্যাপী ও গতকাল ভোর থেকে একটানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ঝিনাইদহের জনজীবন। কখনো ভারি আবার কখনো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন শহরে চলাচলকারীরা। ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন মানুষ। প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়ে বৃষ্টির কারণে আটকা পড়ছেন শহরে। বৃষ্টির কারণে দোকানপাটে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে অনেককে। সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষ। কাজের সন্ধানে বের হয়ে কাজ না পেয়ে অনেককে বসে থাকতে দেখা গেছে।

সর্বশেষ খবর