বুধবার, ২৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

আখাউড়ায় পাখি রক্ষায় স্বপ্নচারী ১৩ যুবকের উদ্যোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

আখাউড়ায় পাখি রক্ষায় স্বপ্নচারী ১৩ যুবকের উদ্যোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আখাউড়ায় পাখি রক্ষায় স্বপ্নচারী ১৩ যুবক ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন। উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের ধলেশ্বর, আবদুল্লাহপুর হীরাপুর, আনন্দপুর, রাজেন্দ্রপুরসহ কয়েকটি গ্রামের এই যুবকরা ‘সীমান্ত পাখি রক্ষা সংগঠন’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছেন। গত ১৮ এপ্রিল ধলেশ্বর গ্রামের রাবিয়া খাতুন স্মৃতি পাঠাগারে এক সভার মাধ্যমে এ সংগঠন যাত্রা করে। সংগঠনের  বেশির ভাগ সদস্যই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কয়েকজন চাকরিজীবীও রয়েছেন। এ সংগঠনের মাধ্যমে পাখি হত্যা, পাখির আবাসস্থল নষ্ট না করার আহ্বান জানিয়ে এলাকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০টি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। সাইনবোর্ডের স্লোগানগুলো হলো- ‘পাখি বাঁচান, পরিবেশ সুস্থ রাখুন ও আনন্দময় জীবন গড়ুন। পাখি রক্ষায় আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ, আপনিও শামিল হোন। এসব লেখা মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। পথচারীরা সাইনবোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে এক পলক চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন। পাখিরা যাতে গাছে নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারে সেজন্য গাছে গাছে কলস বাঁধা হয়েছে। ইতিমধ্যে ২৫টি গাছে কলস বাঁধা হয়েছে। আরও ২৫টি বাঁধা হবে।

এ ছাড়াও এলাকায় লিফলেট বিতরণসহ মাইকিং করে পাখি রক্ষার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টির পরিকল্পনা রয়েছে এ উদ্যমি তরুণদের। একটি পাখিও যেন কারও দ্বারা প্রাণ না হারায় এমন আশা পাখি রক্ষা সংগঠনের সদস্যদের। সংগঠনের আহ্বায়ক অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তোফায়েল চৌধুরী জানান, প্রকৃতিতে পাখির ভূমিকা অপরিসীম। পাখির কিচিরমিচির শব্দ আমাদের মনকে প্রফুল্ল করে। পাখির কুহু কুহু ডাক কার না ভালো লাগে। অপরিকল্পিতভাবে ঘর-বাড়িসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করছে মানুষ। ডোবা, পুকুর, জলাশয় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। কেটে ফেলা হচ্ছে ঝোপঝাড়। এতে পাখির আবাসস্থল কমে যাচ্ছে। বিপন্ন হয়ে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। কমে যাচ্ছে পাখির আনাগোনা। নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত ও পাখি হত্যা বন্ধে ‘সীমান্ত পাখি রক্ষা সংগঠন’ করা হয়েছে। প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। কোথাও পাখি আটক হওয়ার খবর পেলেই এ সংগঠনের সদস্যরা ছুটে যান। শিকারিকে অনুরোধ করে পাখিটি মুক্ত করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সদস্যদের নিজেদের টাকা দিয়ে এসব কাজের খরচ মেটানো হচ্ছে বলে তিনি জানান। পাখি রক্ষা সংগঠনের সদস্য সচিব কামরুল ইসলাম, সদস্য রুহুল আমিন, মো. ইব্রাহিম ও নিয়ামত ভূইয়া জানান আবাসস্থল কমে যাওয়ায় এখন আর তেমন পাখি দেখা যায় না।

আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, তরুণদের এমন উদ্যোগ সমাজ বদলে দিতে সহায়তা করবে। পাখি রক্ষা সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আকছির এম চৌধুরী বলেন, এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

সর্বশেষ খবর