বাংলাদেশের ছাপচিত্রের জনক সফিউদ্দিন আহমেদ। শিল্পাঙ্গনে নিজের সৃজনশীলতার দ্যুতি ছড়িয়ে এদেশের শিল্পের আঙ্গিনাকে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। যার কারণে তাকে বলা হয় বাংলাদেশের শিল্পগুরু। গতকাল ছিল এই শিল্পগুরুর ৯৯তম জন্মদিন। জন্মজয়ন্তী উদযাপনে একই দিনে একই সঙ্গে রাজধানীর ধানমন্ডির গ্যালারি চিত্রকে শুরু হয়েছে দুটি প্রদর্শনী। প্রদর্শনী দুটি হচ্ছে- সফিউদ্দিন শিল্পালয়ে ‘শিল্পগুরু সফিউদ্দিন আহমেদ পদক’ প্রাপ্ত তিনজন তরুণ ছাপচিত্রীর বিশেষ প্রদর্শনী। আর সফিউদ্দীন আহমেদ প্রিন্টমেকিং স্টুডিওর সদস্যদের নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী। পদকপ্রাপ্ত তিনজন শিল্পী হলেন ফখরুল ইসলাম মজুমদার শাকিল, মো. শাহেদ হোসাইন ও মো. আশরাফুল আলম। অন্যদিকে, প্রিন্টমেকিং স্টুডিওর সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত প্রদর্শনীতে ২০ জন শিল্পীর ২৩টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে। এতে অংশ নেওয়া শিল্পীরা হলেন- আসমিতা আলম শাম্মী, কামরুজ্জামান, সাদেক আহমেদ প্রমুখ। বিকালে এই দুটি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী নিসার হোসেন। শিল্পী সৈয়দ আবুল বারক আলভীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পী আনিসুজ্জামান ও শেখ মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান।সবশ্রেণির দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কের ২১/এ- নম্বরের এই গ্যালারির প্রদর্শনীটি। ২ জুলাই শেষ হবে দশদিনের এই প্রদর্শনী। প্রসঙ্গত, এদেশের চিত্রকলা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ শিল্পগুরু সফিউদ্দিন আহমেদের স্মৃতি রক্ষার্থে রাজধানীতে এ বছর থেকে যাত্রা শুরু করেছে ‘সফিউদ্দিন শিল্পালয়’, ‘সফিউদ্দিন আহমেদ প্রিন্টমেকিং স্টুডিও’ এবং ‘সফিউদ্দিন আহমেদ সংগ্রহশালা’। এ ছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে সফিউদ্দিন আহমেদ পদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ছবি নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ চত্বরে সফিউদ্দিন আহমেদের সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।
চর্চার মাধ্যমেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহমান থাকে : সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, সংস্কৃতি ধারণ, লালন ও চর্চার মাধ্যমেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহমান থাকে। এ বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য রেখেই বর্তমান সংস্কৃতিবান্ধব সরকার জাতীয় সংস্কৃতির পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ, পরিচর্যা, বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। নেত্রকোনা বিরিশিরির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি আয়োজিত গারোদের ঐতিহ্যবাহী দুইদিনের ওয়ানগালা উৎসবের ভার্চুয়াল উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব বলেন। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির নির্বাহী পরিষদের সভাপতি ও নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন ও নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মোঃ আকবর আলী মুন্সী।অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি মিঠুন রাকসাম। প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক সুজন হাজং। শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান।