শনিবার, ২৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

রংপুর-পঞ্চগড়েও সূর্যডিম আম

নিজস্ব প্রতিবেদক রংপুর ও পঞ্চগড় প্রতিনিধি

রংপুর-পঞ্চগড়েও সূর্যডিম আম

পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আম সূর্যডিম বা ‘এগ অব সান’ এখন রংপুর ও পঞ্চগড়েও আবাদ হচ্ছে। পঞ্চগড়ে এ আম চাষ হচ্ছে সীমান্তঘেঁষা উপজেলা তেঁতুলিয়ায়, আর রংপুরে চাষ হচ্ছে ছাদবাগানে।

এই দামি আম ‘এগ অব সান ম্যাঙ্গো’ রংপুরের এক ব্যক্তির ছাদবাগানে শোভা পাচ্ছে। এই প্রজাতির আমকে কেউ সূর্যডিম, কেউ মিয়াজাকি আবার কেউ রেড ম্যাঙ্গো হিসেবে সম্বোধন করে থাকেন। ছাদবাগানে চাষ করা শৌখিন ব্যক্তিটির নাম মহিউদ্দিন আলমগীর তোতা মিয়া। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজার হিসেবে তিনি                দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নগরীর বকুলতলা এলাকায় নিজ বাড়ির দোতলায় ছাদবাগানে এই দুর্লভ প্রজাতির আম ফলিয়েছেন। 

তোতা মিয়া বলেন, দুই বছর আগে এক বন্ধু ভারত থেকে চারটি এই প্রজাতির আমের চারা এনেছিলেন। তিনি একটি চারা নিয়ে ছাদের টবে লাগিয়েছেন। প্রথম অবস্থায় অনেক আম ধরেছিল। কিন্তু টেকেনি। বর্তমানে গাছে ছয়টি আম রয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি আমের ওজন ৭০০ থেকে সাড়ে ৮০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। এই আম প্রতি কেজি ২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। সেই হিসাবে একটি আমের দাম পড়ে ২ লাখ টাকার ওপর। মিয়াজাকি এটি জাপানি আম। বিশ্ববাজারে এটি ‘রেড ম্যাঙ্গো’ নামে পরিচিত। সূর্যডিম আম তথা মিয়াজাকি জাতের এ আম পৃথিবীর অন্য সব আমের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি সুস্বাদু ও মিষ্টি। শুধু স্বাদে নয়, দামে  সবচেয়ে বেশি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ি ঢাকার ডিএই অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আবু সায়েম জানান, ওই আম জাপানে হয়ে থাকে। রংপুরের শৌখিন ব্যক্তিরা ছাদবাগানের টবে ও বাগানে ‘মিয়াজাকি’, ‘রেড ম্যাঙ্গো’ চাষ করতে পারেন। তিনি বলেন, রংপুরে যেমন হাড়িভাঙ্গা আমের সুখ্যাতি সারা দেশে রয়েছে, তেমনি সারা বিশ্বে মিয়াজাকি আমের সুখ্যাতি রয়েছে। এ জাতের আম বাংলাদেশে উৎপাদন করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। এ ছাড়া দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সীমান্তঘেঁষা উপজেলা তেঁতুলিয়ায় চাষ হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আম সূর্যডিম। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজীপাড়া গ্রামের কাজী মাহবুবুর রহমান ২০১৭ সালে এই আমের বাগান গড়ে তোলেন। বাগানে শুরুতে তিনি ২০০ সূর্যডিম আমের গাছ লাগান। পরে আরও ১৩০টি আমের চারা লাগান। বর্তমানে তার বাগানে ৩৩০টি সূর্যডিম আমের গাছ রয়েছে। উপজেলা শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে কাজীপাড়া গ্রাম। ভারতীয় সীমান্তের কোলঘেঁষে একটি সমতলভূমিতে তিনি এই আমের বাগান করেছেন। বর্তমানে গাছে গাছে ঝুলে আছে সূর্যডিম আম। সবুজ, বেগুনি আর গাঢ় লাল রঙের মিশ্রণে দেখতে অনন্য সুন্দর এই আম। প্রত্যেকটি গাছেই ৫০ থেকে ৬০টি আম ধরেছে। ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের এই আম বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতি কেজি আম বিক্রি হচ্ছে হাজার টাকায়। শৌখিন আমভক্তরা এই সূর্যডিম আম কিনছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, কাজী মাহবুবুর রহমানের সূর্যডিম আমের বাগান দেখেছি। প্রচুর ফলন হয়েছে। আমের প্রকৃতি ও স্বাদও ভালো। আমরা মনে করছি এই এলাকায় সূর্যডিম আম চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু সূর্যডিম নয়, বিদেশি উন্নতজাতের নানা প্রজাতির আম চাষও সম্ভব এই উপজেলার সমতলভূমিতে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে এসব আম চাষে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

সর্বশেষ খবর